গতিবিদ্যা – এইচএসসি – পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

উচ্চমাধ্যমিক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর গতিবিদ্যা পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এই গতিবিদ্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছরই এইচএসসি পরিক্ষায় গতিবিদ্যা থেকে সৃজনশীল, ও এমসিকিউ প্রশ্ন আসে। আজকের আর্টিকেলে গতিবিদ্যা – এইচএসসি – পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

গতিবিদ্যা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

গতিবিদ্যা - এইচএসসি - পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্ন- চলন্ত বাস হতে বাইরের গাছপালাগুলোকে গতিশীল মনে হয় – ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: চলন্ত বাস হতে বাইরের গাছপালাগুলোকে গতিশীল মনে হয় আপেক্ষিক বেগের কারণে। প্রত্যেক পর্যবেক্ষক তার নিজ কাঠামোকে স্থির দেখে। চলন্ত বাসের যাত্রী বাসটিকে স্থির দেখবে কিন্তু তার কাছে মনে হবে গাছপালাগুলো বিপরীত দিকে গতিশীল ।

প্রশ্ন- “এ মহাবিশ্বের সকল স্থিতিই, আপেক্ষিক সকল গতিই আপেক্ষিক, কোনো গতিই পরম নয়, পরম নয় কোনো স্থিতিই।”- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: পরম স্থিতিশীল প্রসঙ্গ বস্তুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর স্থিতিকে পরম স্থিতি বলে এবং পরম স্থিতিশীল প্রসঙ্গ বস্তুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর গতিকে পরম গতি বলে। কিন্তু এ মহাবিশ্বের এমন কোনো প্রসঙ্গ বস্তু পাওয়া সম্ভব নয় যা প্রকৃতপক্ষে স্থির রয়েছে। কারণ পৃথিবী প্রতিনিয়ত সূর্যের চারদিকে ঘুরছে, সূর্য ও তার গ্রহ, উপগ্রহ নিয়ে ছায়াপথে ঘুরছে। কাজেই আমরা যখন কোনো বস্তুকে স্থিতিশীল বা কই হারে কমতে গতিশীল বলি তা আমরা কোনো আপাত স্থিতিশীল বস্তুর সাপেক্ষে বলে থাকি। কাজেই আমরা বলতে পারি এ মহাবিশ্বের সকল স্থিতিই আপেক্ষিক, সকল গতিই আপেক্ষিক।

প্রশ্ন- স্থিতি ও গতির মধ্যকার পার্থক্য – ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: এ মহাবিশ্বের সকল স্থিতি ও গতিই আপেক্ষিক, কোনোটিই পরম নয়। প্রসঙ্গ বস্তু ও আলোচ্য বস্তুর পারস্পরিক অবস্থান যদি সময়ের সাথে অপরিবর্তিত থাকে তাহলে আলোচ্য বস্তুটিকে প্রসঙ্গ বস্তুর সাপেক্ষে স্থিতিশীল ধরা হয়। অপরদিকে গতি হলো প্রসঙ্গ বস্তুর সাপেক্ষে একই বেগে কিন্তু একই দিকে চলছে না এরূপ আলোচ্য বস্তুর গতির অবস্থা, অর্থাৎ সময়ের পরিবর্তনের সাথে পরিপার্শ্বের সাপেক্ষে যখন কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে তখন তাকে গতিশীল ধরা হয়।

Read More:  নিউটনিয়ান বলবিদ্যা - এইচএসসি - পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্ন- চলন গতি ও ঘূর্ণন গতির মধ্যে দুইটি পার্থক্য লিখ ।

উত্তর: চলন গতি ও ঘূর্ণন গতির মধ্যে পার্থক্য নিচে উল্লেখ করা হল :

  • ঘূর্ণনগতি
  • চলন গতি

যখন কোনো বস্তু কোনো কোনো বস্তু যদি এমনভাবে নির্দিষ্ট বিন্দু বা রেখা থেকে বস্তু । চলতে থাকে যাতে করে বস্তুর কণাগুলোর দূরত্ব অপরিবর্তিত | সকল কণা একই সময়ে একই রেখে ঐ বিন্দু বা রেখাকে কেন্দ্র দিকে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে করে ঘোরে তখন ঐ বস্তুর তাহলে ঐ গতিকে চলন গতি গতিকে ঘূর্ণন গতি বলে ।

গতিবিদ্যা - এইচএসসি - পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্ন- পর্যায়বৃত্ত গতি ও স্পন্দন গতির মধ্যে পার্থক্য লিখো।

উত্তর: পর্যায়বৃত্ত গতি ও স্পন্দন গতির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:

পর্যায়বৃত্ত

i. কোন গতিশীল বস্তুকণার গতি যদি এমন হয় যে, এটি এর নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই দিক থেকে অতিক্রম করে তবে সেই গতিকে পর্যায়বৃত্ত গতি বলে ।
ii. সকল পর্যাবৃত্ত গতি স্পন্দন গতি নয় ।
iii. উদাহরণ: ঘড়ির কাটা ও বৈদ্যুতিক পাখার গতি ।

স্পন্দন

i. পর্যায়বৃত্ত গতি সম্পন্ন কোন কণা যদি তার পর্যায়কালের অর্ধেক সময় যে দিকে চলে বাকী অর্ধেক সময় তার বিপরীত দিকে চলে তবে সেই গতিকে স্পন্দন গতি বলে ।
ii. সকল স্পন্দন গতি পর্যায়বৃত্ত গতি
iii. উদাহরণ: সরল দোলকের গতি, সুর শলাকার কম্পনের গতি ।

প্রশ্ন- ‘সকল পর্যাবৃত্ত গতি ঘূর্ণন গতি নয়’ – ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: যখন কোনো বস্তু কোনো নির্দিষ্ট বিন্দু বা অক্ষ থেকে বস্তুকণাগুলোর দূরত্ব অপরিবর্তিত রেখে ঐ বিন্দু বা অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘোরে তখন সে বস্তুর গতিকে ঘূর্ণন গতি বলে। অপরদিকে, কোনো গতিশীল বস্তুকণার গতি যদি এমন হয় যে, এটি এর গতি পথ কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পরপর একই দিক থেকে অতিক্রম করে, তাহলে সেই গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে ।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, ঘূর্ণন গতিসম্পন্ন কোনো বস্তুর বৃত্তাকার গতিপথের যেকোনো বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পরপর একই দিক হতে অতিক্রম করতে হয় বলে ঘূর্ণন গতি এক প্রকার পর্যাবৃত্ত গতিও বটে। তবে সকল পর্যায়বৃত্তগতি সম্পন্ন বস্তুর গতি ঘূর্ণন গতি নয়, যেমন, অল্প বিস্তারে সরল দোলকের গতি, যা পুরোপুরি রৈখিক গতি ।

Read More:  Let Me Know What You Think: Professional Alternatives for Effective Communication

প্রশ্ন- সরণ কি অতিক্রান্ত দূরত্বের চেয়ে বেশি হতে পারে? – ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: সরণ হচ্ছে কোনো বস্তুর আদি অবস্থান ও শেষ অবস্থানের মধ্যবর্তী সরলরৈখিক দূরত্ব অর্থাৎ ন্যূনতম দূরত্ব। অন্যদিকে অতিক্রান্ত দূরত্ব সরলরৈখিক বা বক্র উভয়ই হতে পারে। বস্তুটিকে যদি সরলপথে আদি অবস্থান থেকে শেষ অবস্থানে নেয়া হয়, তাহলে সরণ অতিক্রান্ত দূরত্বের সমান হবে। অন্যথায় সরণ সর্বদাই অতিক্রান্ত দূরত্বের চেয়ে কম হবে। সুতরাং সরণ অতিক্রান্ত দূরত্বের চেয়ে বেশী হতে পারে না ।

প্রশ্ন- দুটি বিন্দুর মধ্যে সর্বনিম্ন দুরত্বই সরণ – ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: নির্দিষ্ট দিকে অবস্থানের পরিবর্তনের হারই সরণ। সরণ হল একটি ভেক্টর রাশি । আদি ও শেষ অবস্থানের মধ্যবর্তী সরলরৈখিক দূরত্ব হল সরণ । দুটি বিন্দুর মধ্যে সরলরৈখিক সর্বনিম্ন দূরত্ব হল বিন্দু দুইটির লম্ব দূরত্ব। সুতরাং দুটি বিন্দুর মধ্যে সর্বনিম্ন দূরত্বই হল সরণ।

প্রশ্ন- সমদ্রুতিতে চলমান একটি বস্তুর গতির দিক পরিবর্তন হলে বেগ পরিবর্তন হবে কি? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: আমরা জানি, বেগ একটি ভেক্টর রাশি। এর মান ও দিক উভয়ই বিদ্যমান । যেহেতু ভেক্টর রাশির মান অথবা দিক যেকোন একটি পরিবর্তন বস্তুর গতির দিক পরিবর্তন হলে এর বেগেরও পরিবর্তন হয় । হলেই ভেক্টর রাশিটিও পরিবর্তিত হয়।

প্রশ্ন- বৃত্তাকার পথে এক পাক ঘুরলে সরণ কত হবে ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: বৃত্তাকার পথে একপাক ঘুরলে সরণ হবে শূন্য নির্দিষ্ট দিকে, কোনো বস্তুর অবস্থার পরিবর্তনই হলো বস্তুটির সরণ। কোনো বস্তুর সরণ পথের উপর নির্ভর করে না, বরং এটি বস্তুর আদি ও শেষ অবস্থানের উপর নির্ভর করে। বৃত্তাকার পথে একপাক ঘুরে আসলে বস্তুর আদি ও শেষ অবস্থানের মধ্যে কোনো পরিবর্তন ঘটে না তাই এক্ষেত্রে সরণ শূন্য হয় ।

প্রশ্ন- বেগ ও দ্রুতির একক অভিন্ন হলেও রাশি দুটি ভিন্ন । – ব্যাখ্যা করো।

Read More:  Drawed or Drew: Mastering the Correct Usage with Tips and Examples

উত্তর: দ্রুতি একটি স্কেলার রাশি কিন্তু বেগ একটি ভেক্টর রাশি। দ্রুতি হলো যেকোনো দিকে একক সময়ে বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্ব আর বেগ হলো নির্দিষ্ট দিকে বস্তুর একক সময়ে অতিক্রান্ত দূরত্ব, অর্থাৎ দ্রুতি ও বেগ পরিমাপের ক্ষেত্রে পার্থক্য শুধু দিকের। কোনো রাশির এককের উপর দিকের কোনো প্রভাব নেই। তাই দ্রুতি ও বেগের একক অভিন্ন হলেও রাশি দুটি ভিন্ন

প্রশ্ন- ঘূর্ণনরত ঘড়ির কাঁটার ত্বরণ থাকে কী? – ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: বেগের মানের পরিবর্তন অথবা দিকের পরিবর্তন অথবা উভয়ের পরিবর্তনের ফলে ত্বরণ সৃষ্টি হয়। বৃত্তাকার পথে ঘূর্ণনরত ঘড়ির কাঁটার বেগের মান সুষম থাকলেও দিক প্রতিনিয়তই পরিবর্তনশীল। তাই বলা যায়, ঘূর্ণনরত ঘড়ির কাঁটার ত্বরণ থাকে।

প্রশ্ন- অসম ত্বরণ কখন ঘটে? – ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: যদি কোন বস্তুর গতিকালে তার ত্বরণের মান বা দিক অথবা উভয়ই পরিবর্তন হয় তাহলে সেই ত্বরণকে অসমত্বরণ বলে । অর্থাৎ বস্তুর গতিকালে তার বেগের পরিবর্তনের হার সমান থাকে না ।

প্রশ্ন- তোমার ওজন পৃথিবীর সকল দেশেই সমান হবে কি? – ব্যাখ্যা কর।

গতিবিদ্যা - এইচএসসি - পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

উত্তর: পৃথিবীর সকল দেশেই আমার ওজন সমান হবে না । আমরা জানি ওজন W = mg, এখানে, m = বস্তুর ভর এবং g = অভিকর্ষজ ত্বরণ। বস্তুর ভর একটি ধ্রুব রাশি; সুতরাং কোনো স্থানে বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর নির্ভরশীল। আবার g সমীকরণে G এবং M ধ্রুব
GM R রাশি অর্থাৎ g এর মান ভূ-কেন্দ্র হতে ঐ স্থানের দূরত্বের উপর নির্ভর করে। সুতরাং বলা যায় ভূ-পৃষ্ঠের কোন একটি স্থানে g এর মান নির্দিষ্ট কিন্তু স্থানভেদে এর পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ পৃথিবীর সবদেশে g এর মান অভিন্ন না হওয়ায় আমার ওজন সমান হবে না।

আশাকরি  গতিবিদ্যা পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে।

আরো পড়ুনঃ নিউটনিয়ান বলবিদ্যা – এইচএসসি – পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment