উচ্চমাধ্যমিক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর বাংলা প্রথম পত্রের গদ্যাংশের অন্তর্ভুক্ত একটি গল্পের নাম জীবন ও বৃক্ষ। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এই গল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছরই এইচএসসি পরিক্ষায় জীবন ও বৃক্ষ গল্প থেকে সৃজনশীল, ও এমসিকিউ প্রশ্ন আসে। আজকের আর্টিকেলে জীবন ও বৃক্ষ গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
জীবন ও বৃক্ষ গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর
স্বল্পপ্রাণ স্থূলবুদ্ধি ও জবরদস্তিপ্রিয় মানুষে সংসার পরিপূর্ণ।
সমাজে এমন বহু মানুষ আছে যারা মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, নিতান্ত ঈর্ষান্বিত হয়ে তাদের ক্ষতি করে। কখনো কখনো জবরদস্তি করে স্বার্থ উদ্ধার করে । নিজেদের দৈহিক ও মানসিক পুষ্টির জন্য এসব স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ কোনো কাজই করে না। এ রকম মানুষেই সমাজ-সংসার পরিপূর্ণ ।
মনে হয় আন্তরিকতাশূন্য, উপলব্ধিহীন বুলি।
স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন ও জবরদস্তিপ্রিয় মানুষ ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও জাতিগত অহংকারের নেশায় গুজবে বিশ্বাসী। তারা ভালো করে না বুঝেই মানবতার কথা বলে । তাতে আন্তরিকতা বা ভালোবাসার প্রকাশ থাকে না।
বৃক্ষের দিকে তাকালে জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি সহজ হয়।
বৃক্ষ কেবল মাটির রস টেনে নিজের বৃদ্ধি ঘটিয়ে টিকে থাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সে তার দেহে বিচিত্র বর্ণের ফুল ফোটায় এবং ফল ধরায়। ফুল, ফল এবং অন্যান্য উপকরণ অন্যের কল্যাণে উৎসর্গ করে বৃক্ষ যেমন সার্থকতা লাভ করে, তেমনি মানুষকে অন্যের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হতে হয়। বৃক্ষ এখানে মানুষের জন্য প্রেরণাস্বরূপ। তাই বৃক্ষের দিকে তাকালে মানুষের জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি করা সহজ হয় ।
তিনি নদীর গতির মধ্যেই মনুষ্যত্বের সাদৃশ্য দেখতে পেয়েছেন।
মানুষকে যেমন নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়, তেমনি নদীকেও অনেক বাধা ডিঙিয়ে সাগরের কাছে পৌঁছাতে হয়। এ দিক থেকে রবীন্দ্রনাথ নদীর গতির মধ্যেই মনুষ্যত্বের সাদৃশ্য দেখতে পেয়েছেন ।
অনবরত ধেয়ে চলা মানুষের সাধনা হওয়া উচিত নয়।
মানুষ নদীর মতো চলমান নয়, তবে গতিশীল। মাঝে মাঝে বৃক্ষের মতো তার গোপন ও নীরব সাধনারও প্রয়োজন হয়। এ কারণেই লেখক বলেছেন, অনবরত ধেয়ে চলা নদীর মতো মানুষের সাধনা হওয়া উচিত নয়। সৃজনশীল মানুষেরও প্রাপ্তি ও দানে পার্থক্য দেখা যায় না।’ সৃজনশীল মানুষ তার সৃষ্টিশীল কর্মের সাধনা ও অভিজ্ঞতার – ছাপ রাখে। তার জীবন যখন বৃক্ষের মতো ফুলে-ফলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, প্রশংসা ও মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়, তখন দান আর প্রাপ্তি সমান্তরাল হয়ে যায়। তখন এ দুটির মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।
নীরব ভাষায় বৃক্ষ আমাদের সার্থকতার গান গেয়ে শোনায়।
বৃক্ষের জন্ম, বৃদ্ধি, ফুল ফোটানো, ফল ধরানো, ছায়া ও সৌন্দর্যদান— সবকিছুতেই তার সার্থকতার ছোঁয়া। বৃক্ষ এ সার্থকতার গান শোনায় নীরব ভাষায়, সেবাদানের এ সাধনা নীরবেই সাধিত হয়। নীরব সাধনা ও সার্থকতার উৎস যেমন বৃক্ষ, তেমনি মানুষের অনুপ্রেরণার উৎসও বৃক্ষ ।
মানুষের বৃদ্ধি কেবল দৈহিক নয়, আত্মিকও।
মানুষের দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আত্মিক বৃদ্ধিও হয়। দৈহিক বৃদ্ধির ওপর মানুষের যেমন হাত রয়েছে, তেমনি আত্মাকেও মানুষ সৃষ্টি করে নেয়। সুখ-দুঃখ-বেদনার অন্তরের উপলব্ধি পরিপক্ব হয়, যা আত্মারই নামান্তর। আর পরিপক্বতার জন্য প্রয়োজন হয় বিচিত্র অভিজ্ঞতা, প্রচুর প্রেম ও গভীর অনুভূতির।
তাই শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের এত মূল্য।
বিজ্ঞানের চেয়ে সাহিত্য ও শিল্পকলার মূল্য শিক্ষাক্ষেত্রে বেশি। কারণ বিজ্ঞানে আত্মার উন্নতি হয় না, জীবনবোধ ও মূল্যবোধে অন্তর পরিপূর্ণ হয় না। কেবল সাহিত্য ও শিল্পকলার মাধ্যমেই তা সম্ভব হয়। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে না সেগুলোর এত মূল্য ।
বৃক্ষ যে কেবল বৃদ্ধির ইশারা তা নয়— প্রশান্তিরও ইঙ্গিত।
বৃক্ষ নিজে শান্ত ও সহিষ্ণু। সে সবকিছু নীরবে সয়ে যায়। কাউকে কিছু বলে না, কোনো প্রতিবাদও করে না। নিজের নীরব ও গোপন সাধনার মধ্য দিয়ে সে প্রশান্তিরও ইঙ্গিত দেয় ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
হিমেল সাহেব তার বাড়ির চারপাশে অনেক বৃক্ষ রোপণ করেছেন। তিনি বৃক্ষপ্রেমী মানুষ। বিভিন্ন গাছে যখন ফুল ফোটে, ফল হয়, [বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ, সিলেট] তখন তিনি আনন্দ খুঁজে পান । তিনি প্রকৃতির মধ্যেই জীবনের সার্থকতা খুঁজে নেন ।
ক. কিসের দিকে তাকালে জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি সহজ হয়?
খ. ‘সাধনার ব্যাপারে প্রাপ্তি এক বড় জিনিস’- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ ।
গ. উদ্দীপকের হিমেল সাহেবের মানসিকতার সাথে ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধটি কতটা সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর । ?
ঘ. উদ্দীপকটি কি ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের প্রতিনিধিত্ব করেছে? যুক্তিসহ মতামত দাও ।
ক. জ্ঞান
বৃক্ষের দিকে তাকালে জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি সহজ হয় ।
খ. অনুধাবন
সাধনা না করলে সাফল্য আসে না, আর সাফল্য না এলে প্রাপ্তির স্বাদ পাওয়া যায় না।— প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধে লেখক বৃক্ষের জীবসাধনার আলোকে সবাইকে জীবন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ বৃক্ষের মধ্যে সাধনা রয়েছে। বৃক্ষ জন্ম থেকেই নিরন্তন সাধনা করে চলে । বৃক্ষ আমাদের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে শান্তি ও সেবার বাণী প্রচার করে। বৃক্ষের সাধনায় আমরা ফুল-ফল পাই। এই ফুল-ফল দানের মধ্যেই বৃক্ষের সার্থকতা নিহিত। এ কারণেই বলা হয়েছে, সাধনার ব্যাপারে প্রাপ্তি একটা বড় জিনিস
গ. প্রয়োগ
সারকথা : বৃক্ষের দানই তার প্রাপ্তি । প্রাপ্তি না থাকলে সাধনা ব্যর্থ হয়ে যেত। তাই প্রাবন্ধিক বলেছেন, সাধনার ব্যাপারে প্রাপ্তি একটা বড় হয়ে যেত। জিনিস ।
উদ্দীপকের হিমেল সাহেবের মানসিকতার সাথে ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধ অনেকটাই সাদৃশ্যপূর্ণ । বৃক্ষের বিকাশ, পরিপূর্ণতা ও সার্থকতার পেছনে রয়েছে তার নীরব সাধনা। বৃক্ষ ফুলে-ফলে পরিপূর্ণতা পায়, আর সেসব অন্যকে দান করে সার্থকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে। তাই বৃক্ষের দিকে তাকালে জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি সহজ হয় । উদ্দীপকের হিমেল সাহেব তার বাড়ির চারপাশে অনেক বৃক্ষ রোপণ করেছেন। তিনি বৃক্ষপ্রেমী মানুষ । বিভিন্ন গাছে যখন ফুল ফোটে, ফল হয়, তখন এসবের মধ্যে তিনি আনন্দ খুঁজে পান ।
তিনি প্রকৃতির মধ্যেই জীবনের সার্থকতা খুঁজে নেন। অপরদিকে ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধেও মোতাহের হোসেন চৌধুরী বৃক্ষের জয়গান গেয়েছেন। বৃক্ষের মধ্যে তিনি জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধির বিষয়টি তুলে ধরেছেন। প্রাবন্ধিক মনে করেন মানুষের উচিত বৃক্ষের মতো নীরব সাধক ও পরিশ্রমী হওয়া। তিনি আরও মনে করেন বৃক্ষই মানুষের আদর্শ হওয়া উচিত। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের হিমেল সাহেবের মানসিকতার সাথে ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধটি বহুলাংশে সাদৃশ্যপূর্ণ ।
সারকথা : ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক মনে করেন বৃক্ষের সাধনাই মানবজীবনের আদর্শ হওয়া উচিত। উদ্দীপকের হিমেল সাহেব সেই প্রত্যাশাই পূরণ করেছেন। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের হিমেল সাহেবের মানসিকতার সাথে আলোচ্য প্রবন্ধটির সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
হ্যাঁ, উদ্দীপকটি ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের প্রতিনিধিত্ব করেছে।
বৃক্ষের মাধ্যমে আমাদের জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধির বিষয়টি ফুটে ওঠে। বৃক্ষের নীরব সাধনার মাধ্যমে আমরা প্রাপ্তির ছবি দেখতে পাই। নীরব ভাষায় বৃক্ষ আমাদের সার্থকতার যে গান শোনায়, তা আমাদেরকে অনুভূতি দিয়ে, চিন্তা-চেতনা দিয়ে বুঝে নিজেদের জীবনের কাজে লাগাতে হবে।
উদ্দীপকের হিমেল সাহেব বৃক্ষের মধ্যেই সার্থকতা খুঁজে পান। তাই বৃক্ষকে ভালোবেসে তিনি হয়ে উঠেছেন বৃক্ষপ্রেমী। প্রকৃতিই তাকে শান্তির পথ দেখায়। অন্যদিকে ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের লেখক তাঁর প্রবন্ধে বৃক্ষের জয়গান গেয়েছেন। বৃক্ষের ফুল ফোটানো এবং ফল ধরানোর মধ্যে সাধনার বিষয়টি প্রাবন্ধিক তুলে ধরেছেন। বৃক্ষের দিকে তাকালে জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি সহজ হয়। বৃক্ষের গতি ও বিকাশকে উপলব্ধি করা দরকার, নয়তো তার সার্থকতা ও পরিপূর্ণতা মানুষের সামনে ফুটিয়ে তোলা
সম্ভব হবে না।
প্রাবন্ধিকের মতে, বৃক্ষের জীবনের গতি ও বিকাশকে উপলব্ধি করলেই বৃক্ষের সার্থকতা আমাদের সামনে ফুটে উঠবে। বৃক্ষের মধ্যেই আমরা আমাদের জীবনের সার্থকতা খুঁজে পাই। অন্যদিকে উদ্দীপকের হিমেল সাহেবও বৃক্ষের মধ্যেই জীবনের সার্থকতা খুঁজে নেন। হিমেল সাহেবের বৃক্ষপ্রেম ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের প্রতিনিধিত্বশীল একটি অংশ। তাই বলা যায় যে, ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের প্রতিনিধিত্ব করেছে। উদ্দীপকটি
সারকথা : উদ্দীপকের হিমেল সাহেব বৃক্ষপ্রেমী মানুষ। তিনি প্রকৃতির মধ্যে জীবনের সার্থকতা খুঁজে পেয়েছেন। আলোচ্য প্রবন্ধেও প্রাবন্ধিক বৃক্ষের সাধনা ও প্রাপ্তির কথা বলেছেন, যা মানুষের আদর্শ হওয়া উচিত। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকটি আলোচ্য প্রবন্ধের প্রতিনিধিত্ব করে ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
১৯৫০ সালে নয়াদিল্লিতে জন্ম নেওয়া চিরকাল মানুষের পক্ষে থাকা শিল্পী শাবানা আজমী বলতে থাকেন, একটাই মানবজীবন পাই আমরা প্রত্যেকে। এটিকে অর্থবহ করে তোলা যেমন রাষ্ট্রের দায়িত্ব তেমনই বিভিন্ন অর্থে সামর্থ্যবান প্রত্যেকে যার যার অবস্থানে থেকে নিজের জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার চেষ্টা করলে পৃথিবীটা সুন্দর হয়ে যেত। তখনও বেঙ্গলের বাইরে মঞ্চসজ্জা চলছে। ধীর পায়ে এগোতে থাকলেন [তথ্যসূত্র : দৈনিক সমকাল- ২১ অক্টোবর, ২০১২] শাবানা আজমী, যিনি মানুষের জন্য শিল্পের ব্রত নিয়ে দেশ থেকে দেশে ছুটে চলছেন অবিরল ।
ক. কার মতে মনুষ্যত্বের বেদনা নদীর গতিতেই উপলব্ধ হয়?
খ. রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে মোতাহের হোসেন চৌধুরীর দর্শনের পার্থক্য কেন?
গ. ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি উদ্দীপকে বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে?
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের শেষ কথা নয়।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
ক. জ্ঞান
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে মনুষ্যত্বের বেদনা নদীর গতিতেই উপলব্ধ হয় ।
খ. অনুধাবন
রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে মোতাহের হোসেন চৌধুরীর দর্শনের চেতনাগত দিক থেকে পার্থক্য রয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ জীবনকে নদীর সঙ্গে তুলনা করেছেন, যেখানে ভাঙা-গড়া আছে, উচ্ছলতা আছে। সে ক্ষতিও করে, উপকারও করে। কিন্তু মোতাহের হোসেন চৌধুরী বৃক্ষের কাছে মানবজীবনের সার্থকতা খুঁজে পেয়েছেন । বৃক্ষ শুধুই মঙ্গলের জন্য, অমঙ্গলের জন্য নয় । নদীতে মঙ্গল ও অমঙ্গল এবং আত্মবিসর্জন আছে, আত্ম উৎকর্ষ নেই, যা বৃক্ষে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান। বৃক্ষের মাঝেই মানবজীবনের সার্থকতার পূর্ণাঙ্গ চিত্র খুঁজে পাওয়া সম্ভব। জীবনদৃষ্টির ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ও মোতাহের হোসেন চৌধুরীর মধ্যে তাই দর্শনগত পার্থক্য রয়েছে।
সারকথা : বাস্তব জীবনদৃষ্টির দিক দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ও মোতাহের হোসেন চৌধুরীর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
গ. প্রয়োগ
‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের মানবজীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে। প্রত্যেক মানুষের জীবনেই একটা উদ্দেশ্য থাকে। উদ্দেশ্যহীন জীবনে সফলতা আসে না। জীবন নানা সমস্যায় সমাকীর্ণ হয়ে পড়ে। আবার সংকীর্ণ পথের যাত্রী কেবল আত্মকেন্দ্রিক বলে তার জীবনও সীমাবদ্ধ। আবার অনেকে আছেন কেবল ব্যক্তিস্বার্থেই তাঁদের জীবন সীমাবদ্ধ রাখেন না। তাঁরা চান মানুষের মঙ্গল ।
‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধে লেখক মানুষের জীবনকে বৃক্ষের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন বৃক্ষ ফুলে-ফলে পূর্ণ হয়ে সেসব অন্যকে দান করে পরিপূর্ণতা পায়। ঠিক তেমনই মানুষের জীবনের উদ্দেশ্যও হলো অন্যের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া। আর এতেই মানবজীবনের পরম সার্থকতা। উদ্দীপকের শাবানা আজমীর বক্তব্যেও এই বিষয়টি ফুটে উঠেছে। তিনি বলেছেন যে, একটাই মানবজীবন পাই আমরা, যাকে অন্যের উপকারে লাগিয়ে অর্থবহ করে তোলা উচিত ।
সারকথা: জীবনের উদ্দেশ্য হলো প্রেমে, সৌন্দর্যে, সেবায় বিকশিত হওয়া; ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের এ বিষয়টি উদ্দীপকে বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকটি ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের শেষ কথা নয় ।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
নিজেকে পরার্থে বিলিয়ে দেওয়ার মাঝে জীবনের সার্থকতা নিহিত রয়েছে। জগতে প্রেম, সৌন্দর্য এবং সেবায় যাঁরা নিজেদের বিলিয়ে দেন তাঁরাই সার্থক ।
‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধে লেখক পরার্থে আত্মনিবেদিত সুকৃতিময় ও বিবেকবোধসম্পন্ন মানবজীবন প্রত্যাশা করেছেন। স্বার্থপরতা, অহংকার, নিষ্ঠুরতা পৃথিবীর সৌন্দর্য ও শান্তি বিনষ্ট করে চলছে। পৃথিবীকে সৌন্দর্যমণ্ডিত ও শান্তিপূর্ণ করে তুলতে বিবেকবান মানুষ প্রয়োজন । উদ্দীপকে শাবানা আজমী শিল্পের জন্য আত্মনিয়োগ করেছেন। শিল্পের ব্রত নিয়ে তিনি ছুটে চলছেন দেশ থেকে দেশে । ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধে জীবনের যে মহৎ উদ্দেশ্যর কথা বলা হয়েছে সেটি উদ্দীপকেও আছে, তবে তা আংশিক । তাই উদ্দীপকটি এ প্রবন্ধের শেষ কথা নয়।
সারকথা : ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক সমাজে যেমন মানুষ প্রত্যাশা করেছেন উদ্দীপকের শাবানা আজমী চিন্তায়-চেতনায় তেমনি একজন মানুষ । তবে উদ্দীপকেটিতে প্রকাশিত কথাটিই আলোচ্য প্রবন্ধের শেষ কথা নয়, প্রবন্ধে আরও বলা হয়েছে মানুষের বিকাশ, সাধনা ও স্বার্থহীন হওয়ার কথা ।
আশাকরি জীবন ও বৃক্ষ গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে।
আরো পড়ুনঃ আমার পথ গল্পের প্রশ্নের উত্তর