প্রিয় শিক্ষার্থীরা, কেমন আছো? আশা করি সকলেই ভালো আছো। আজকে তোমাদের পদার্থের গঠন অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে আলোচনা করবো। তো চলো শুরু করা যাক।
পদার্থের গঠন অধ্যায় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা
Concept | Description |
পদার্থ | সবকিছু যার দ্বারা গঠিত |
পরমাণুর ক্ষুদ্রতম কণা | পরমাণু |
নিউক্লিয়াস | পরমাণুর কেন্দ্র |
ভর সংখ্যা | নিউট্রন ও প্রোটনের মোট সংখ্যা |
পারমাণবিক সংখ্যা | নিউক্লিয়াসের প্রোটনের সংখ্যা |
আয়ন | চার্জযুক্ত পরমাণু |
সমস্থানিক | একই মৌলের ভিন্ন ভরের পরমাণু |
পদার্থের গঠন অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ পরমাণু বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ – উক্তিটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ পরমাণুর কেন্দ্র নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রন রয়েছে। প্রোটন ধনাত্নক চার্জ বিশিষ্ট কিন্তু নিউট্রন চার্জ নিরপেক্ষ। তাই নিউক্লিয়াস ধনাত্নক চার্জ বিশিষ্ট। আবার নিউক্লিয়াসের চারদিকে ঋণাত্নক চার্জযুক্ত ইলেক্ট্রন থাকে। প্রোটন ও ইলেক্ট্রন সংখ্যা সমান। ফলে নিউক্লিয়াসের ধনাত্নক চার্জ পরস্পরকে প্রশমিত করে। তাই পরমাণু বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ।
প্রশ্নঃ টাংস্টেনের সংকেত “W” লেখা হয় কেন?
উত্তরঃ টাংস্টেনের সুইডিশ ভাষার অর্থ শক্ত পাথর। টাংস্টেনকে এর আকরিক থেকে নিষ্কাশনের সময় প্রচুর পরিমাণে টিন (Sn) লাগে বলে একে উলফ তথা ক্ষুধার্থ নেকড়ের সাথে তুলনা করা হয়। এর আকরিক উলফ্রামাইট থেকে একে নিষ্কাশন করা হয়। তাই টাংস্টেন W দ্বারা প্রকাশ করা হয় যা জার্মান ভাষা Wolfram থেকে এসেছে।
প্রশ্নঃ পারমাণবিক সংখ্যা ও ভর সংখ্যা এর মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ কোন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত মোট প্রোটন সংখ্যাকে পারমাণবিক সংখ্যা বলা হয়। অপরদিকে পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যাকে ভর সংখ্যা বলা হয়। পারমাণবিক সংখ্যাকে Z দ্বারা এবং ভর সংখ্যাকে A দ্বারা প্রকাশ করা হয়। ভর সংখ্যা হতে নিউট্রন সংখ্যা বিয়োগ করলে পারমাণবিক সংখ্যা পাওয়া যায়।
প্রশ্নঃ সোডিয়ামের ভরসংখ্যা ২৩ বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কোন মৌলের নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যার সমষ্টিকে ভরসংখ্যা বলা হয়। সোডিয়ামের ভরসংখ্যা ২৩ বলতে বুঝায়, সোডিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াসে এগারোটি (১১ টি) প্রোটন ও বারোটি (১২ টি) নিউট্রন বিদ্যমান রয়েছে। এদের যোগফল হলো -২৩। তাই সোডিয়ামের ভরসংখ্যা হলো ২৩।
প্রশ্নঃ পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান ইলেক্ট্রন কেন্দ্র পতিত হয় না কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান ইলেক্ট্রন কেন্দ্র পতিত হয় না। কারণ ধণাত্নক আআধান বিশিষ্ট নিউক্লিয়াস ও ঋণাত্নক আধানবিশিষ্ট ইলেক্ট্রনসমূহের পারস্পরিক স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণজনিত কেন্দ্রমূখী বল এবং ঘূর্ণায়মান ইলেক্ট্রনের কেন্দ্র বহির্মুখী বল পরস্পর সমান।
প্রশ্নঃ রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল কেন পারমাণবিক বর্ণালীর ব্যাখ্যা দিতে পারে না? ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ কোনো পরমাণুতে যখন কোনো ইলেক্ট্রন একটি নিম্মতর কক্ষপথ থেকে উচ্চতর কক্ষপথে স্থানান্তরিত হয় তখন নির্দিষ্ট পরিমণ শক্তি শোষণ করে। আবার যখন কোনো উচ্চতর শক্তিস্তর হতে নিম্মতর কক্ষপথে স্থানান্তরিত হয় তখন শক্তি বিকিরণ করে। বিকিরিত শক্তিকে আলোক বর্ণালী হিসেবে পাওয়া যায়। কিন্তু রাদারর্ফোড মডেল অনুসারে e- ইলেক্ট্রনের শক্তি বিকিরণ বা শোষণ ঘটে না। এই কারণে রাদারর্ফোড পরমাণূ মডেল পারমাণবিক বর্ণালীর ব্যাখ্যা দিতে পারে না।
প্রশ্নঃ পরমাণুতে কিভাবে বর্ণালী সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ বর্ণালি হলো বিভিন্ন বর্ণের আলোর সমাবেশ। বোর পরমাণু মডেল অনুসারে পরমাণুর মধ্যে কোনো ইলেক্ট্রন যখন একটি নিম্মতর কক্ষপথ থেকে উচ্চতর কক্ষপথে স্থানান্তরিত হয় তখন নির্দিষ্ট পরিমান শক্তি শোষণ করে। আবার যখন উচ্চতর শক্তিস্তর থেকে নিম্মতর শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত হয় তখন শক্তি বিকিরণ করে। বিকিরিত ও শক্তিকে আলোক বর্ণালী হিসাবে পাওয়া যায়। এভাবে পরমাণুতে বর্ণালি সৃষ্টি হয়।
প্রশ্নঃ অরবিট ও অরবিটালের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তরঃ অরবিট ও অরবিটালের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলোঃ
অরবিটঃ
i) “অরবিট” শব্দটির অর্থ হচ্ছে বোর প্রদত্ত হাইড্রোজেন পরমাণুর গঠন সংক্রান্ত মতবাদ। এ মতবাদ অনুসারে নিউক্লিয়াসের চারদিকে সুনির্দিষ্ট বৃত্তাকার কক্ষপথে ইলেক্ট্রনসমূহ অর্জন করে। এ বৃত্তাকার কক্ষপথ সমূহকে অরবিট বলা হয়।
ii) অরবিট দ্বারা নিউক্লিয়াসের চারদিকে দ্বিমাত্রিক বৃত্তাকার পথে ইলেক্ট্রন আবর্তন করে বোঝায়।
অরবিটালঃ
i) “অরবিটাল” শব্দটির উৎস হচ্ছে কোয়ান্টাম বলবিদ্যা। এ বলবিদ্যা অনুসারে ইলেক্ট্রনসমূহের কোনো সুনির্দিষ্ট কক্ষপথ নেই। তবে নিউক্লিয়াসের কিছু স্থানে ইলেক্ট্রেনসমূহের প্রাপ্তির সম্ভাবনা খুবই বেশি। নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে ইলেক্ট্রন মেঘের উচ্চ ঘনত্ব বিশিষ্ট ত্রিমাত্রিক অঞ্চলসমূহকে অরবিটাল বলা হয়। প্রকৃ্তপক্ষে অরবিটাল দ্বারা পরমাণুতে বিভিন্ন শক্তিস্তরও বোঝানো হয়েছে।
ii) অরবিটাল দ্বারা নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে ত্রিমাত্রিক স্থানে (X,Y,Z) অক্ষ বরাবর ইলেক্ট্রন আবর্তন করে বোঝায়।
প্রশ্নঃ আপেক্ষিক পারমাণবিক ভরের কোনো একক থাকে নয়া কেনো?
উত্তরঃ দুটি একই রকম রাশি অনুপাত আকারে থাকলে এর কোনো একক থাকে না। কোনো মৌলের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভরকে নিম্মরূপে প্রকাশ করা হয় –
মৌলের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর = মৌলের একটি পরমাণুর ভর / একটি কার্বন – ১২ আইসোটোপের ভরের ১/১২ অংশ
সুতরাং, দেখা যায় যে, আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর দুটি পৃথক ভরের অনুপাত। তাই এর কোনো একক থাকে না।
প্রশ্নঃ অক্সিজেনের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর ১৬ বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ অক্সিজেনের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর ১৬ বলতে বুঝায়, অক্সিজেনের একটি পরমাণুর ভর হাইড্রোজেনের একটি পরমাণুর তুলনায় ১৬ গুণ ভারী।
প্রশ্নঃ কৃ্ষি ক্ষেত্রে ফসফরাসের আইসোটোপের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করে কৃ্ষিক্ষেত্রে নতুন নতুন উন্নতমানের বীজ উদ্ভাবন করা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে ফলনের মানের উন্নতি এবং পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে।
তেজস্ক্রিয় 32p আইসোটোপ যুক্ত ফসফেট দ্রবণ উদ্ভিদের মূলধারায় সূচিত করা হয়। গাইগার কাউন্টার ব্যবহার করে উদ্ভিদের পুরো চলাচল চিহ্নিত করে বিজ্ঞানীরা কী কৌশলে ফসফরাস ব্যবহার করে উদ্ভিদ বেড়ে ওঠে তা জানতে পারেন।
প্রশ্নঃ তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন মৌলের পরমাণু হতে বিভিন্ন রশ্নি নির্গত হওয়ার ফলে মৌলটি স্বতস্ফূর্তভাবে অন্য কোনো মৌলে পরিণত হওয়ার ধর্মকে তেজস্ক্রিয়তা বলা হয়।
প্রশ্নঃ খাদ্য সংরক্ষণে তেজস্ক্রিয় রশ্নির দুটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তরঃ খাদ্য সংরক্ষণে তেজস্ক্রিয় রশ্নির দুটি ব্যবহার নিম্মরূপঃ
(i) সকল প্রকার শাক-সবজি ও ফল সংরক্ষণে।
(ii) খাদ্যে জন্মানো ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে।
প্রশ্নঃ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ক্ষতিকর প্রভাবে কী?
উত্তরঃ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের অনেক ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। তেজস্ক্রিয়তা ক্যান্সার হওয়ার বিশেষ একটি কারণ। কেমোথেরাপিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়। কেমোথেরাপির ফলে চুল পড়ে যায়, বমিবমি ভাব হয়। অনেক সময় আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়াকেও ধ্বংস করে। এছাড়া তেজস্ক্রিয় আণবিক বোমা জীবনকূলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
প্রশ্নঃ তেজস্ক্রিয়তা পদার্থের নিউক্লিয় ধর্ম – ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ যে সকল পদার্থ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন আলোকরশ্মি যেমন গামা রশ্মি এবং কণা যেমন আলফা ও বিটা কণা নিঃসরণ করার মাধ্যমে অন্য পদার্থে পরিণত হয় তাদেরকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বলা হয়। তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান প্রোটন ও নিউট্রনের আকর্ষণ সাধারণ নিউক্লিয়াসের তুলনায় কম, তাই সহজে ভেঙে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াসের পরিবর্তন হয়ে নতুন নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়।
প্রশ্নঃ তেজস্ক্রিয়তা একটি নিউক্লিয় ফিসন বিক্রিয়া – ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ যে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় বড় নিউক্লিয়াস ভেঙে ছোট ছোট নিউক্লিয়াস তৈরী করে তাকে নিউক্লিয়ার ফিসন বিক্রিয়া বলা হয়। অপরদিকে কোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসের স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন ধরণের রশ্মি বিকিরণ সহকারে নিউক্লিয়াসের পরিবর্তনকে তেজস্ক্রিয়তা বলে। তেজস্ক্রিয় মৌলের নিউক্লিয়াস ভেঙে সাথে সাথে নতুন নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হয়। তেজস্ক্রিয় মৌলের এই ধর্মই হলো তেজস্ক্রিয়তা। যেহেতু নিউক্লিয়ার ফিসন বিক্রিয়ায় নিউক্লিয়াসের ভাঙন ঘটে এবং নতুন নতুন নিউক্লিয়াস তৈরী হয়। এ কারণে তেজস্ক্রিয়তা একটি নিউক্লিয়ার ফিসন বিক্রিয়া।
প্রশ্নঃ আইসোটোপের ব্যবহার লেখো।
উত্তরঃ আইসোটোপের ব্যবহার বহুমুখী। চিকিতসাক্ষেত্রে, কৃ্ষিক্ষত্রে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে আইসোটোপ বিপুল পরিমাণে ব্যবহ্রত হয়। 99Tc রোগাক্রান্ত স্থানের ছবি তুলে রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে থাকে। থাইরয়েডের ক্যান্সার নিরাময়ে 131I আইসোটোপ, টিউমারের ধ্বংসে 60Co আইসোটোপ এবং নিউকোমিয়া নিরাময়ে 32P ব্যবহৃত হয়। কৃ্ষিজমিতে নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের পরিমাণ হিসেব করা হয় আইসোটোপের মাধ্যমে। এছাড়াও পারমাণবিক রিয়েক্টরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আইসোটোপ ব্য্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ রাদারফোর্ড ও বোর মডেলের মধ্যে কোনটি বেশি গ্রহণযোগ্য তার ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ বোরের পরমাণু মডেলীর অন্যতম প্রধান সাফল্য হচ্ছে শক্তিস্তরের আকার, হাইড্রোজেন পরমাণুর বর্ণালী ব্যাখ্যা, ইলেক্ট্রনের শক্তি শোষণ বা বিকিরণের ধারণা দেওয়া। রাদারফোর্ডের সৌর মডেলের প্রধান ভিত্তি ছিলো সৌরজগতের সাথে পরমাণুর অভ্যন্তরীন সিস্টেমের তুলনা যা ম্যাক্সওয়েলের তত্বনুসারে পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। বোরের মডেলের যদিও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু সৌরমডেলের কিছু ত্রুটি দূর করতে পেরেছিল। তাই এই দুই মডেলের মধ্যে বোরের পরমাণু মডেল অধিক গ্রহণযোগ্য।
মূল ধারণা
- পদার্থ কী?
- সবকিছু যার দ্বারা গঠিত, তাকেই পদার্থ বলে।
- পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা কী?
- পরমাণু হল পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
- পরমাণুর গঠন কেমন?
- একটি পরমাণুতে প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রন থাকে। প্রোটন ও নিউট্রন নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে এবং ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘুরতে থাকে।
- তত্ত্ব কী?
- কোনো বিষয় সম্পর্কে আমাদের বোঝার চেষ্টাকে তত্ত্ব বলে।
- মডেল কী?
- কোনো বস্তু বা ঘটনার সরলীকৃত উপস্থাপনাকে মডেল বলে।
- পদার্থের তিনটি অবস্থা কী কী?
- কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয়।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
- পরমাণুর কেন্দ্রকে কী বলে?
- নিউক্লিয়াস।
- পরমাণুর ভরের অধিকাংশ কোথায় কেন্দ্রীভূত থাকে?
- নিউক্লিয়াসে, কারণ প্রোটন ও নিউট্রনের ভর ইলেকট্রনের তুলনায় অনেক বেশি।
- পরমাণুর কোন কণা চার্জবিহীন?
- নিউট্রন।
- পরমাণুর কোন কণা ঋণাত্মক চার্জযুক্ত?
- ইলেকট্রন।
- পরমাণুর কোন কণা ধনাত্মক চার্জযুক্ত?
- প্রোটন।
- পরমাণুর ভর সংখ্যা কী?
- পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যাকে ভর সংখ্যা বলে।
- পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা কী?
- পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটনের সংখ্যাকে পারমাণবিক সংখ্যা বলে।
- আয়ন কী?
- ইলেকট্রন গ্রহণ বা ত্যাগ করে যখন কোনো পরমাণু চার্জযুক্ত হয়, তখন তাকে আয়ন বলে।
- সমস্থানিক কী?
- একই মৌলের এমন দুটি পরমাণু যাদের পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন, তাদের সমস্থানিক বলে।
একনজরে কিছু গুরুত্পূর্ণ তথ্য
প্রশ্নঃ মৌলিক পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পদার্থকে ভাঙলে বা রাসায়নিক উপায়ে বিশ্লেষণ করলে ঐ পদার্থ ব্যাতীত অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তাকে মৌলিক পদার্থ বা মৌল বলে। যেমনঃ আয়রন (Fe), অক্সিজেন(O), ব্রোমিন(Br) প্রভৃতি।
প্রশ্নঃ যৌগিক পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল পাদার্থকে ভাঙলে বা রাসায়নিক উপায়ে বিশ্লেষণ করলে দুই বা দুইয়ের অধিক মৌল পাওয়া যায় তাদেরকে যৌগিক পদার্থ বলা হয়। যেমনঃ পানির (H2O) রাসায়নিক বিশ্লেষণে হাইড্রোজেন (H) ও অক্সিজেন (O) পাওয়া যায়।
2H2O — 2H2 + O2
সুতরাং পানি (H2O) একটি যৌগিক পদার্থ।
প্রশ্নঃ পরমাণু কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যার মধ্যে ঐ মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে তাকে ঐ মৌলের পরমাণু বলে।
প্রশ্নঃ অণু কাকে বলে?
উত্তরঃ দুই বা দুইয়ের অধিক সংখ্যক পরমাণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে অণু গঠন করে। এই পরমাণু সমূহ একই মৌলের হতে পারে আবার একাধিক ভিন্ন মৌলেরও হতে পারে। যেমনঃ অক্সিজেনের অণু গঠনে শুধুমাত্র অক্সিজেনের দুটি পরমাণু পরস্পর যুক্ত হয়। আবাআর পানির অণু গঠনের ক্ষেত্রে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সাহতে একটি অক্সিজেন পরমাণু যুক্ত থাকে।
প্রশ্নঃ মৌলের প্রতীক কি?
উত্তরঃ কোনো একটি মৌলের ল্যাটিন বা ইংরেজী নামের সংক্ষিপ্ত রূপকে ঐ মৌলের প্রতীক বলা হয়ে থাকে। প্রতিটি মৌলের প্রতীক একটি অপরটি থেকে ভিন্ন। তাই একটি প্রতীক দিয়ে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট মৌলকেই বুঝায়। যেমনঃ সোডিয়াম, সালফার, ও ক্লোরিন এর প্রতীক যথাক্রমে Na, S ও Cl.
প্রশ্নঃ পারমাণবিক সংখ্যা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো একটি মৌলের একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যাকে ঐ মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বলে। একে Z দ্বারা প্রকাশ করা হয়। পারমাণবিক সংখ্যা একটি মৌলের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। একটি পারমাণবিক সংখ্যা দ্বারা কেবল একটি নির্দিষ্ট মৌলকেই বোঝায়। যেমনঃ পারমাণনিক সংখ্যা ৬ দ্বারা বোঝা যায় মৌলটি কার্বন (C).
প্রোটন সংখ্যা = পারমাণবিক সংখ্যা
নিউট্রন সংখ্যা = নিউক্লিওন সংখ্যা – প্রোটন সংখ্যা (A-Z)
প্রশ্নঃ ভরসংখ্যা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যার যোগফলকে ঐ পরমাণুর ভর সংখ্যা বলে। একে A দ্বারা প্রকাশ করা হয়। কোনো একটি মৌল যেমন সোডিয়ামের (Na) পারমাণবিক সংখ্যা, ভর সংখ্যা ও নিউট্রন সংখ্যা এর সংক্ষিপ্ত রূপটি হলোঃ
ভরসংখ্যা (A)
পারমাণবিক সংখ্যা বা প্রোটন সংখ্যা (Z)
আমি আশা করছি পদার্থের গঠন অধ্যায়ের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তরগুলি তোমাদের ভালো লাগবে।
আরো পড়ুনঃ পদার্থের অবস্থা ও চাপ – এইচএসসি – পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর