উচ্চমাধ্যমিক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর বাংলা প্রথম পত্রের গদ্যাংশের অন্তর্ভুক্ত একটি গল্পের নাম রেইনকোট। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এই গল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছরই এইচএসসি পরিক্ষায় রেইনকোট গল্প থেকে সৃজনশীল, ও এমসিকিউ প্রশ্ন আসে। আজকের আর্টিকেলে রেইনকোট গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
রেইনকোট গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর
এই বৃষ্টির মেয়াদ আল্লা দিলে পুরো তিন দিন।
আকাশে মেঘ দেখে আন্দাজ করা যায় বৃষ্টি কদিন থাকবে। আবার প্রবাদ-প্রবচন মতে সপ্তাহের কোন দিন থেকে শুরু হলো তা অনুসরণ করেও বলা যায় বৃষ্টি কদিন থাকবে। শনিবার শুরু হলে সাত দিন আর মঙ্গলবার শুরু হলে তিন দিন । সেই বিচারে বলা হয়েছে যেহেতু মঙ্গলবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে সুতরাং আল্লা দিলে তিন দিন তো বৃষ্টি থাকবেই ।
বাদলায় বন্দুক-বারুদ কি একটু জিরিয়ে নেবে না?
প্রতিদিনই দিনে-রাতে গুলির আওয়াজ শোনা যায়। কখনো মিলিটারির, কখনো মুক্তিযোদ্ধার। অস্ত্রের খেলা রাতেই চলে বেশি। তিন দিন বৃষ্টি থাকলে বাদলার মধ্যে বন্দুক- বারুদও একটু জিরিয়ে নেবে, অর্থাৎ পরিস্থিতি একটু শান্ত থাকবে। গল্পের নায়ক নুরুল হুদা এমন ধারণা করেছেন । দোয়া মনে হলো ঠিকই কিন্তু টুপিটা মাথায় দিতে ভুলে গেল। মনের ভেতরে সারাক্ষণ মিলিটারির ভয় । আর কাজের জন্য তাড়াহুড়া করায় নুরুল হুদা দোয়া পড়তে পড়তে এগিয়ে গেলেও টুপিটা পরতে ভুলে যান ।
পিওনকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে ইচ্ছা করছে।
ভোরবেলা দরজায় প্রবল কড়া নাড়া শুনে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যান নুরুল হুদা। ভাবেন মিলিটারি এসে গেছে আর জানটাও খতম হওয়ার সময় হয়ে গেছে। কিন্তু দরজা খুলে দেখলেন তার কলেজের পিয়ন। তাই হাঁফ ছেড়ে আনন্দে তাকে চুমু খেতে ইচ্ছে করে নুরুল হুদার ।
সামনের দেওয়ালে বোমা মেরে এতটা পথ ক্রস করে গেল কী করে?
পিয়ন জানায় কলেজের দেয়াল ঘেঁষে কারা যেন বোমা ফাটিয়ে গেছে গত রাতে। নুরুল হুদা হিসাব কষে মেলাতে পারছেন না। কারণ দেয়ালের পর বাগান, টেনিস লন, তারপর কলেজ দালান, খেলার দুটি মাঠ। মাঠ পেরিয়ে প্রিন্সিপালের কোয়ার্টার। এর সাথে মিলিটারি ক্যাম্প। সামনের দেয়ালে বোমা মেরে তারা এতটা পথ অতিক্রম, করে গেল কী করে?
ইসহাক নিজেই এখন মিলিটারির কর্নেল বললেও চলে।” ইসহাক কলেজের পিয়ন। সে উর্দু বলতে পারে। সে পাকিস্তানের সমর্থক। এ কারণে কলেজের প্রফেসররা তো বটেই, প্রিন্সিপাল নিজেও তাকে তোয়াজ করে। কলেজে কর্নেল আসার খবর পৌঁছাতে এসে তার মেজাজটাও কর্নেলের মতো মনে হয়। এপ্রিলের পর থেকে বাংলায় কথা বলা প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। তার হাবভাব অনেকটা কর্নেলের মতোই।
কপালে আজ কী আছে আল্লাই জানে।
বউ নুরুল হুদাকে বৃষ্টির মধ্যে বাইরে যেতে মানা করছেন। তবু প্রিন্সিপালের ধমকের ভয়ে এবং কলেজে কর্নেল এসেছে তাই তিনি কলেজে যেতে বাধ্য। তার মনে আশঙ্কা, ফায়ারিং স্কোয়াডে দাঁড় না করালেই হয়। তিনি ভয় পেয়ে ভাবছেন, কপালে আজ কী আছে আল্লাই জানে!
পাকিস্তানকে যদি বাঁচাতে হয় তো সব স্কুল-কলেজ থেকে শহিদ মিনার হটাও।
মিলিটারির ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে প্রিন্সিপালের প্রস্তাব ছিল স্কুল-কলেজ থেকে শহিদ মিনার হটানোর । তারা প্রিন্সিপালের পরামর্শ শুনেছে। কারণ প্রিন্সিপালের মতে, এগুলো পাকিস্তানের শরীরের কাঁটা। কাজেই পাকিস্তানকে বাঁচাতে হলে এগুলো উপড়ে ফেলতে হবে ।
এর ওপর বৌ যদি মিন্টুর কথা তোলে তো অস্ত্র ঢুকে পড়ে তার ঘরের মধ্যিখানে।
শ্যালক মিন্টু কেমিস্ট্রির লেকচারার নুরুল হুদার বাসা থেকেই মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে বলে তাকে সারাক্ষণ তটস্থ থাকতে হয়। মিলিটারি পিছু নেওয়ার পর থেকে তিনি চারবার বাসা বদল করেছেন। এখন আছেন শহর থেকে দূরে বিল আর ধানখেতের কাছে। এই ভয়ের মধ্যে বউ আবার মিন্টুর রেইনকোটটা পরে বের হতে বলেছেন। ফলে তিনি ধারণা করেছেন, শেষ পর্যন্ত হয়তো অস্ত্রও ঢুকে পড়বে তার ঘরের মধ্যে ।
সে বেশ সৎসঙ্গে চলে যাবে একেবারে কলেজ পর্যন্ত।
বৃষ্টির মধ্যে কলেজে যাওয়ার পথে নুরুল হুদা শ্যালক মুক্তিযোদ্ধা মিন্টুর রেইনকোট পরে বাইরে বের হন । পথে রিকশা না পেয়ে তিনি একটি বাসে উঠে বসেন। তাকে দেখে চোর-পকেটমার-লুটেরা গোছের লোক বাস থেকে নেমে গেলে তার মনে হয় এখন যারা আছে তারা সৎলোক, ভালো মানুষ। এদের সঙ্গে অর্থাৎ সৎসঙ্গে তিনি চলে যাবেন কলেজ পর্যন্ত ।
ফের নতুন করে অপরাধীমুক্ত বাসে যেতে এখন ভালো লাগছে।
‘রেইনকোট’ গল্পে বাস থামলে নয়জন লোক ওঠে। নুরুল হুদা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তাদের সবাইকে দেখেন। তাদের মধ্যে চারজন ‘রোখো রোখো’ বলে নেমে পড়ে । প্রথম তিনজনকে তার মনে হয় ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে মিলিটারির সঙ্গে ঘোরে আর সুন্দরী মেয়েমানুষের খোঁজ দেয়। এরা হলো রাজাকার। অন্যজন ছিঁচকে চোর। বাস নতুন করে অপরাধীমুক্ত হয়। নুরুল হুদা তাই নিশ্চিন্ত হন ।
সেনাবাহিনীকে নিয়ে মজা করে শায়েরি করা খুব বড়ো অপরাধ।
উর্দুর অধ্যাপক আকবর সাজিদ সেনাবাহিনীকে নিয়ে যে শায়েরিটি মুখে মুখে তৈরি করেছিলেন, প্রিন্সিপাল’ সেটা মুখস্থ শুনিয়েছিল কর্নেলকে। কর্নেল সেনাবাহিনীকে নিয়ে প্রিন্সিপালের সেই আনন্দ মশকরায় বিরক্ত হয়েছিল। কেননা এটা মারাত্মক অপরাধ। তাই প্রিন্সিপালকে সে সতর্ক করে দেয়— সেনাবাহিনীকে নিয়ে মজা করে শায়েরি করা খুব বড় অপরাধ ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
সেই মুহূর্তে কয়েকজন সেপাই বাঙ্কারে পজিশন নেয়ার জন্য ঢুকলে পায়ের চাপে বিস্ফোরিত হয় মাইন। প্রচণ্ড শব্দ ছড়িয়ে পড়ে গায়ে, সেই সঙ্গে আর্তচিৎকার। শাহাবুদ্দিন ছেলেটির হাত ধরে লাফিয়ে নৌকায় ওঠে। ক্যাম্পের উল্টোদিকে ছুটে যায় নৌকা। দক্ষ মাঝি এক টানে অনেক দূরে চলে আসে।
ক. মিন্টু কত তারিখ যুদ্ধে যায়?
খ. “তবু একটা না একটা ভুল হয়েই যায় ।’ এখানে কী ভুল হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে? বুঝিয়ে লেখ ।
গ. উদ্দীপকটি ‘রেইনকোট’ গল্পের যে বিশেষ দিকটিকে নির্দেশ করেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘রেইনকোট’ গল্পের একটি দিককে প্রতিফলিত করে।”— মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
খ. অনুধাবন
“তবু একটা না একটা ভুল হয়েই যায় ।”— এখানে পাঁচ কালেমা ভুল হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে । মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলার মানুষ ছিল আতঙ্কগ্রস্ত । তখন পাকিস্তানি মিলিটারি সবার বাড়িতে বাড়িতে আক্রমণ চালায়। হানাদার বাহিনীর ভয়ে সবাই তখন ভীত-সন্ত্রস্ত । মিলিটারির আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবাই সুরা-কালেমা মুখস্থ রাখে। নুরুল হুদাও সুরা-কালেমা মুখস্থ করেছেন। রাস্তায় বের হলে তিনি পাঁচ কালেমা ঠোঁটের ওপর প্রস্তুত রাখেন। তারপরও তার কোনো একটা ভুল হয়েই যায় । এই বিষয়টিই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন আলোচ্য উক্তিতে ।
গ. প্রয়োগ
সারকথা : পাকিস্তানি মিলিটারির ভয়ে নুরুল হুদার মুখস্থ করা পাঁচ কালেমার ভুল হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে।
উদ্দীপকটি ‘রেইনকোট’ গল্পের গেরিলা আক্রমণের দিকটিকে নির্দেশ করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গেরিলা আক্রমণের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে কোণঠাসা করে ফেলেছিল । গেরিলা আক্রমণে সাধারণত শত্রুপক্ষকে আক্রমণ প্রতিহত করার কোনো সুযোগ দেওয়া হয় না।
উদ্দীপকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের একটি বর্ণনা রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা আক্রমণ চালায় মিলিটারি ক্যাম্পে। মুক্তিযোদ্ধাদের পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে পাকিস্তানি মিলিটারি দিশেহারা হয়ে পড়ে। তাদের আর্তচিৎকার চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা আক্রমণ করে কৌশলে বের হয়ে আসে। ‘রেইনকোট’ গল্পেও গেরিলা আক্রমণের বর্ণনা রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে বৈদ্যুতিক ট্র্যান্সফর্মার ধ্বংস হয়ে যায়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালায়। উদ্দীপকটিও ‘রেইনকোট’ গল্পে বর্ণিত এমন গেরিলা আক্রমণের দিকটিকে নির্দেশ করে । সারকথা : উদ্দীপকের মতো ‘রেইনকোট’ গল্পেও মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণের বর্ণনা রয়েছে। এই আক্রমণের কারণেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকটি ‘রেইনকোট’ গল্পের একটি দিককে প্রতিফলিত করে।”- মন্তব্যটি যথার্থ বাংলাদেশ আজ স্বাধীন । এই স্বাধীনতার পেছনে মুক্তিযোদ্ধাদের অসামান্য অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলার মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা সর্বশক্তি দিয়ে শত্রুদের প্রতিহত করেন। উদ্দীপকটি মুক্তিযুদ্ধের একটি বিশেষ দিক প্রতিফলিত করে। সেটি হলো মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ। উদ্দীপকে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্ষতি হওয়ার বিষয়টি জানা যায়।
মুক্তিযোদ্ধাদের সফল গেরিলা আক্রমণে হানাদার বাহিনীর আর্তচিৎকার চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ‘রেইনকোট’ গল্পেও মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলাআক্রমণের বর্ণনা পাওয়া যায়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা আক্রমণের মাধ্যমে ঢাকা কলেজের সামনে বৈদ্যুতিক ট্র্যান্সফর্মার ধ্বংস করে দেন। এই কলেজের জিমনেশিয়ামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প থাকার পরও মুক্তিযোদ্ধারা সফল আক্রমণ চালান। ‘রেইনকোট’ গল্পে এই গেরিলা আক্রমণের পাশাপাশি কলেজশিক্ষক নুরুল হুদার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিক রূপ প্রত্যক্ষ করা যায়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কীভাবে বাংলার মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল সেই সম্পর্কেই ধারণা লাভ করা যায়।
রূপকধর্মী এই ‘রেইনকোট’ গল্পে আমরা প্রত্যক্ষ করি মুক্তিযোদ্ধার ব্যবহৃত রেইনকোট কীভাবে একটি মানুষকে সাহসী ও সংগ্রামী করে তোলে।” ‘রেইনকোট’ গল্পে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের যে বিস্তৃত চিত্র অঙ্কিত হয়েছে উদ্দীপকে তার একটি ঘটনা প্রতিফলিত হয়েছে। সেটি হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ। মুক্তিযোদ্ধারা সফল গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে কোণঠাসা করে ফেলেন। এভাবে উদ্দীপকটি ‘রেইনকোট’ গল্পের একটি দিককে প্রতিফলিত করেছে। তাই বলা যায়; প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
দেখতে কেমন তুমি? অনেকেই প্রশ্ন করে, খোঁজে কুলজি তোমার আঁতিপাঁতি। তোমার সন্ধানে ঘোরে ঝানু গুপ্তচর, সৈন্য, পাড়ায় পাড়ায়। তন্ন তন্ন করে খোঁজে প্রতি ঘর । পারলে নীলিমা চিরে বের করতো তোমাকে ওরা, দিতো ডুব গহন পাতালে । তুমি আর ভবিষ্যৎ যাচ্ছো হাত ধরে পরস্পর ।
ক. মাঠ পেরিয়ে একটু কোন দিকে প্রিন্সিপালের কোয়ার্টার?
খ. ‘এদিককার মানুষ চোখে খালি নৌকা দেখে, নৌকা ভরা অস্ত্র’- এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা দাও ।
গ. উদ্দীপক থেকে ‘রেইনকোট’ গল্পের কোন বিষয়ে আঁচ পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. “উদ্দীপকের মূলভাবটি ‘রেইনকোট’ গল্পের খণ্ডাংশ মাত্র”- উক্তিটির সত্যাসত্য বিচার কর ।
ক. জ্ঞান
মাঠ পেরিয়ে একটু বাঁ দিকে প্রিন্সিপালের কোয়ার্টার।
খ. অনুধাবন
মুক্তিযুদ্ধে গেরিলারা অনেক সাহসী ভূমিকা পালন করেন । তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর হামলা করেন। গল্পে উল্লিখিত নুরুল হুদা গেরিলাদের নৌকা করে অস্ত্র বহন করার দৃশ্যটি দেখেন। তিনি ভাবেন তার শ্যালক মিন্টুও গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা। তার বউ তার ভাই মিন্টুর কথা তুললে তার মনে হয় অস্ত্র যেন ঘরে চলে এসেছে। মূলত নুরুল হুদার এমন চিন্তা-ভাবনার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গেরিলা তৎপরতার কথা প্রকাশ পায় ।
গ. প্রয়োগ
সারকথা : আলোচ্য উক্তিটি মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা তৎপরতার কথা প্রকাশ করে ।
উদ্দীপক থেকে ‘রেইনকোট’ গল্পের গেরিলা যোদ্ধার বিষয়ে আঁচ পাওয়া যায় । গেরিলা হামলা বলতে বোঝায় অতর্কিত হামলা। শত্রুপক্ষ নিরাপদ ভেবে যখন অন্যমনস্ক থাকে তখন হঠাৎ এ হামলা চালানো হয়। ১৯৭১ সালে গেরিলা যোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গেরিলারা মুক্তিযুদ্ধে তাদের অসীম সাহস দেখিয়েছে। গেরিলাদের আক্রমণে ঢাকা কলেজের আশপাশের এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ নষ্ট হলে গেরিলাদের ধরার জন্য পাকিস্তানি সেনারা তৎপর হয়ে ওঠে । উদ্দীপকের কবিতায়ও গেরিলাদের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। যুদ্ধের শেষ দিকে গেরিলা আক্রমণ বেড়ে যায়। গেরিলা আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা কোনো কূলকিনারা খুঁজে পায় না। তাই তারা গেরিলাদের ধরার জন্য উঠে-পড়ে লাগে। উদ্দীপক থেকে ‘রেইনকোট’ গল্পের এ বিষয়টির আঁচই পাওয়া যায়।
সারকথা : মুক্তিযুদ্ধের সময় গেরিলা আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। তখন তারা গেরিলা যোদ্ধাদের ধরার জন্য অভিযান চালাতে থাকে । উদ্দীপক ও আলোচ্য গল্প উভয় জায়গায়ই এ কথা প্রকাশ পেয়েছে ।
ঘ ,.উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকের মূলভাবটি ‘রেইনকোট’ গল্পের খণ্ডাংশ মাত্র।”- মন্তব্যটি সত্য ।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। এ যুদ্ধে বাংলার বীর সন্তানরা শক্তি, সাহস ও দেশপ্রেমের পরিচয় দেয়। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয় ।
আলোচ্য গল্পে মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ শুরু হয়েছে। গেরিলারা ঢাকা কলেজের সামনে আক্রমণ করলে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার ধ্বংস হয়ে যায়। কলেজের আশপাশে বিদ্যুৎ সংযোগ নষ্ট হলে গেরিলাদের ধরার জন্য পাকিস্তানি সেনারা তৎপর হয়ে ওঠে। শুরু হয় তাদের বর্বর নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ। উদ্দীপকে কবি গেরিলাদের স্বচক্ষে দেখতে চান। শুধু কবি নন, পাকিস্তানি সেনারাও গেরিলাকে তন্ন তন্ন করে খোঁজে। কবি মনে করেন প্রয়োজনে তারা আকাশ-পাতাল চিরে বের করত গেরিলাদের।
‘রেইনকোট’ গল্পে গেরিলা যোদ্ধাদের প্রসঙ্গ ছাড়াও সুবিধাভোগী রাজাকারদের কথা, পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম বর্বরতার কথা এবং আরও অনেক কথা বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে শুধু গেরিলা যোদ্ধাদের প্রসঙ্গের অবতারণা করা হয়েছে। তাই বলা যায় যে, “উদ্দীপকটি ‘রেইনকোট’ গল্পের খণ্ডাংশ মাত্র।
আরো পড়ুনঃ আহ্বান গল্পের প্রশ্নের উত্তর