উচ্চমাধ্যমিক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর বাংলা প্রথম পত্রের গদ্যাংশের অন্তর্ভুক্ত একটি গল্পের নাম আহ্বান। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এই গল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছরই এইচএসসি পরিক্ষায় আহ্বান গল্প থেকে সৃজনশীল, ও এমসিকিউ প্রশ্ন আসে। আজকের আর্টিকেলে আহ্বান গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
আহ্বান গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর
পৈতৃক বাড়ি যা ছিল ভেঙেচুরে ভিটিতে জঙ্গল গজিয়েছে।
ছেলেবেলায় লেখক তাঁর পৈতৃক বাড়ির যে অবস্থা দেখেছেন তার সাথে বর্তমানের কোনো মিল নেই। কোনো বসতবাড়িতে মানুষ বসবাস করলে তা যেমন পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন ও জীর্ণতামুক্ত থাকে, সেখানে বসবাস না করলে তা আবার আগাছা-জঙ্গলে পরিপূর্ণ, জীর্ণ হয়ে পড়ে। ঝড়ে, বৃষ্টিতে ঘর-বাড়ি ভেঙে যায়। মেরামত না করার ফলে দেয়াল ধসে পড়ে। আলোচ্য উক্তিটির মাধ্যমে লেখক সেটিই তুলে ধরতে চেয়েছেন ।
গোলাপোরা ধান, গোয়ালপোরা গরু।
বহু দিন পরে লেখক গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে এক বুড়ির সাথে পরিচিত হন। সে এখন জীর্ণ-শীর্ণ দেহের অধিকারী, সব দিন ঠিকমতো খেতে পায় না । পাতানো এক মেয়ে অন্যের বাড়ি কাজ করে যা আয় করে তা থেকে ঐ বুড়িকে সাহায্য করে। কিন্তু বুড়ির অবস্থা এমন ছিল না- স্বামী জমির করাতির জীবিতকালে গোলাভরা ধান তার ছিল, গোয়ালভরা গরু ছিল।
আমার তো তেনার নাম করতে নেই বাবা।
আগের দিনে গ্রামীণ সমাজব্যবস্থায় নানা রকম রীতি – সংস্কার প্রচলিত ছিল। স্বামীর নাম স্ত্রীর মুখে না আনা তেমনি এক গ্রামীণ সংস্কার। গল্পের বুড়ি সেই সংস্কার মেনে চলত। তাই তার পরিচয় জানতে চাইলে লেখকের কাছে সে স্বামীর নাম না বলে আলোচ্য উক্তিটি করেছে। এতে একদিকে সমাজের কুসংস্কার অন্যদিকে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে।
আমার কি মরণ আছে রে বাবা।
লেখক কুশলাদি জিজ্ঞাসা করায় বুড়ি তাকে আক্ষেপ করে এ কথা বলেছিল। কারণ এই জগতে বুড়ির আপন বলতে কেউ নেই। এক নাতজামাই তার খোঁজখবর নেয় না। এক পাতানো মেয়ের কাছে সে থাকে। ঠিকমতো খেতে পায় না। তার জীবন-যন্ত্রণা কেবল মৃত্যুর মধ্য দিয়েই শেষ হতে পারে। এই কারণে সে আক্ষেপ করে লেখককে আলোচ্য উক্তিটি করেছে।
বুড়ি একটু ঘাবড়ে গেল। ভয়ে ভয়ে বলে, কেন বাবা, পয়সা কেন?
বুড়ি তার স্নেহের বন্ধনে লেখককে বেঁধে নেয়। লেখককে আদর করে ‘গোপাল’ বলে ডাকে। একদিন সকালবেলা বুড়ি দুধ নিয়ে গেলে লেখক তার কারণ জানতে চান এবং বুড়িকে কত টাকা দিতে হবে তা জিজ্ঞাসা করেন। বুড়ি লেখকের এ আচরণে ঘাবড়ে গেল। পরে সে লেখকের সাল প্রতি স্নেহের দাবিতে ঐ দুধের জন্য পয়সা কেন নিবে সেই প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করেছে।
সেবার বুড়ির বাড়িতে আমার যাওয়া ঘটে উঠল না ।
গল্পের লেখককে বুড়ি সন্তানের মতো স্নেহ করত। সেই স্নেহের দাবিতেই বুড়ি লেখককে তার বাড়িতে যেতে বলেছিল । কিন্তু লেখক নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় বৃদ্ধার বাড়িতে যেতে পারেননি । কিছু না কিছু আনবেই। কখনো পাকা আম, কখনো পাতি লেবু, কখনো বা একছড়া কাঁচকলা কি এক ফালি কুমড়ো । ‘আহ্বান’ গল্পের বুড়ি লেখককে সন্তানের মতো স্নেহ- মমতায় সিক্ত করতে চাইত। তাই সে স্নেহের দাবিতে তার লেখকের জন্য নানা কিছু নিয়ে আসে। লেখক অন্য ধর্মের লোক হলেও বুড়ির কাছে তিনি ছিলেন সন্তানতুল্য। তাই তাঁর জন্য বুড়ির এত দরদ ।
তেনার বড্ড অসুখ। এবার বোধহয় বাঁচবে না।
ছয় মাস পরে লেখক গ্রামে গেলে সেখানে বুড়ির পাতানো মেয়ে হাজরা ব্যাটার বউ তাকে খবর দেয় যে, বুড়ি খুব অসুস্থ, হয়তো আর বাঁচবে না । লেখককে সে দেখতে চায় ।
ওর স্নেহাতুর আত্মা বহু দূর থেকে আমায় আহ্বান করে এনেছে।
বুড়ি তার গোপালকে প্রাণভরে ভালোবাসত, স্নেহ করত। তাই অকপটে তার কাছে কাফনের কাপড় চেয়েছিল । গত রাতে বুড়ির মৃত্যু হয়েছে। লেখক দূর থেকে তার গ্রামে গিয়েই সেকথা শুনলেন। তাঁর মনে হলো বুড়ির একান্ত আহ্বানেই তিনি গ্রামে ফিরে এসেছেন।
দ্যাও বাবা— তুমি দ্যাও।
দুজন জোয়ান ছেলে বুড়ির কবর খুঁড়ছে। কবর দেওয়ার পর সকলে এক এক কোদাল মাটি দিল কবরের উপর। তখন শুকুর মিয়া লেখককে বুড়ির কবরের উপর এক কোদাল মাটি দিতে বললেন ।
দিলাম এক কোদাল মাটি ।
মুসলিম রীতি অনুসারে মানুষ মারা গেলে তাকে কবর দেওয়া হয় । লেখককে বুড়ি যে স্নেহের বাঁধনে বেঁধেছিলেন তাতে ধর্মের ভেদ ছিল না। লেখকের গ্রামের মানুষরা পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিল লেখকের ধর্ম-বর্ণের কথা। শুকুর মিঞা যখন লেখককে বুড়ির কবরে মাটি দিতে বলল— তখন তিনিও এক কোদাল মাটি কবরে দিলেন। এখানে লেখকের অসাম্প্রদায়িক চেতনাটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
নন্তু শেখের মৃতদেহটা কবরে নামাতে গিয়ে চোখজোড়া পানিতে ঝাপসা হয়ে এল মন্তুর। “মইরলে পরে সব মিয়ারে যাইতে অইবো কবরে।” সারাদিন আর বাড়ি ফিরল না মন্তু। দিঘির পাড়ে কাটিয়ে দিল সে। ওর মায়ের কবরটা দেখল। এককালে বেশ উঁচু ছিল ওটা। অনেক দূর থেকে চোখে পড়ত, এখন মাটির নিচে খাদ হয়ে গেছে .এক হাঁটু। অনেকগুলো ছোট ছোট গর্ত নেমে গেছে ভেতরের দিকে, সেখানে মায়ের দু একখানা হাড় হয়তো আজও খুঁজে পাওয়া যাবে । মায়ের জন্যে আজ হঠাৎ ভীষণ কান্না পেল ওর।
ক. বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে বিএ পাস করেন?
খ. বুড়ি আগে এপাড়া-ওপাড়া যাওয়া আসা করত না কেন?
গ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠার দৃশ্যপটের সাথে ‘আহ্বান’ গল্পের অনুরূপ দৃশ্যপটের বৈসাদৃশ্যগুলো চিহ্নিত কর ।
ঘ. “উদ্দীপকের মন্তুর কান্না আর ‘আহ্বান’ গল্পের লেখকের স্মৃতিকাতরতা একসূত্রে গাঁথা।”— যথার্থতা মূল্যায়ন কর ।
ক. জ্ঞান
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯১৮ সালে বিএ পাস করেন ।
খ. অনুধাবন
স্বামী জীবিতাবস্থায় সংসারে কোনো অভাব না থাকায় বুড়ি এপাড়া-ওপাড়া যাওয়া আসা করত না ।
বুড়ির স্বামী জমির করাতি বেঁচে থাকা অবস্থায় তার সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা ছিল । পাঁচচালা প্রকাণ্ড ঘর, গোলা ভরা ধান আর গোয়াল ভরা গরু নিয়ে বুড়ির সুখে দিন কাটত। স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার মতো কেউ না থাকায় জীবনের তাগিদে বুড়িকে এপাড়া-ওপাড়া যাওয়া আসা করতে হয় ।
গ. প্রয়োগ
সারকথা : সমর্থ স্বামী এবং আর্থিক সচ্ছলতা ছিল বলে বুড়ি তখন এপাড়া-ওপাড়া যাওয়া আসা করত না।
উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দৃশ্যপটের সাথে ‘আহ্বান’ গল্পের অনুরূপ দৃশ্যপটের কিছু বৈসাদৃশ্য রয়েছে। ধর্মানুসারে মৃতের সৎকার করা হয়। জীবদ্দশায় মানুষ যে মহৎ কাজ করে তার ফলভোগীরা তাকে মৃত্যুর পরও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে । সেই সাথে তাদের শেষ পরিণতি সম্পর্কেও সজাগ হয় ।
উদ্দীপকে নন্তু শেখ নামের একজনের মৃতদেহ কবরে নামাতে গিয়ে মন্তুর চোখ জলে ভরে যায়। তার মনে পড়ে “মইরলে পরে সব মিয়ারে যাইতে অইবো কবরে”র মতো এক চিরন্তন সত্য। এরপর মন্তুর মায়ের কথা মনে পড়ে। মায়ের কবর দেখা এবং এ সম্পর্কিত ভাবনায় তার দিন কাটে। উদ্দীপকের নন্তু শেখের মৃতদেহ সৎকারের মতো ‘আহ্বান’ গল্পের বুড়ির মৃতদেহ সৎকার হলেও বুড়ির জন্য কাউকে দু ফোঁটা চোখের জল ফেলতে দেখা যায় না। বরং বুড়িকে কবর দিতে আসা কাউকে আনমনা হতেও দেখা যায় না । এভাবে উদ্দীপকের দৃশ্যপটের সাথে ‘আহ্বান’ গল্পের দৃশ্যপট বৈসাদৃশ্যপূর্ণ ।
সারকথা : উদ্দীপকের নন্তু শেখের মৃতদেহ কবরে নামানোর সময় থেকে মন্তুর মানসিক প্রতিক্রিয়ার সাথে ‘আহ্বান’ গল্পের বুড়িকে কবর দিতে আসা লোকজনের মানসিক প্রতিক্রিয়ায় পার্থক্য রয়েছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকের মন্তুর কান্না আর ‘আহ্বান’ গল্পের লেখকের স্মৃতিকাতরতা এক সূত্রে গাঁথা।”— মন্তব্যটি যথার্থ ।
মানুষ হিসেবে আমরা একে অন্যের সাথে স্নেহ-মমতা ও ভালোবাসার বন্ধনে বাঁধা পড়ি। মানুষের সাথে মানুষের এই যে বন্ধন বা সম্পর্ক তা শুধু জীবৎকালেরই নয়, মৃত্যুর পরেও সক্রিয় থাকে।
উদ্দীপকে নন্তু শেখের মৃতদেহ কবরে নামাতে গিয়ে মন্তুর “মইরলে পরে সব মিয়ারে যাইতে অইবো কবরে”র মতো মানবজীবনের চরম সত্য মনে পড়ে। তার মায়ের কবরের কথা মনে পড়ে। মায়ের কবর দেখে দেখে, মায়ের মৃতদেহের অস্তিত্বের কথা স্মরণ করে মন্তুর সারা দিন কেটে যায়। মায়ের জন্য তার হঠাৎ ভীষণ কান্না পায়। মায়ের জন্য মন্তুর অনুভূতি ‘আহ্বান’ গল্পের বুড়ির কবরে লেখকের মাটি দেওয়ার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে উঠে ।
‘আহ্বান’ গল্পের শুকুর মিঞার কথামতো লেখক বুড়ির কবরে এক কোদাল মাটি দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মনে হয়, আজ বুড়ি বেঁচে থাকলে বলে উঠত— ‘অ মোর গোপাল।’ লেখকের এ স্মৃতিকাতরতা বুড়ির প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা-ভালোবাসার প্রকাশ। এভাবে উদ্দীপকের মন্তুর কান্না আর ‘আহ্বান’ গল্পের লেখকের স্মৃতিকাতরতা একসূত্রে গাঁথা পড়েছে।
সারকথা : উদ্দীপকের মন্তু দীর্ঘদিন পর মায়ের জন্যে কেঁদে উঠেছে, অনুরূপভাবে স্নেহ-ভালোবাসার টানেই দীর্ঘদিন পর লেখক বুড়ির কথা স্মরণ করেছেন । উদ্দীপকের মন্তু আর ‘আহ্বান’ গল্পের লেখকের স্মৃতিকাতরতা একই সূত্রে গাঁথা ।
উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
সুজিত শহরে চাকরি করে। তার মা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুজিতকে বারবার খবর দিলেও সুজিত সময় করে আসতে পারছিল না। সুজিতের মায়ের বড় ইচ্ছে ছিল মরার আগে সুজিতকে একবার দেখার। অবশেষে সুজিত ছুটি নিয়ে বাড়ি আসে। কিন্তু মায়ের সাথে তার আর দেখা হয় না। এই কারণে সুজিত মনে মনে অপরাধবোধে ভুগতে থাকে ।
ক. বুড়ি কার কাছ থেকে দুধ চেয়ে এনেছিল?
খ. বুড়ি পয়সা নিয়ে চলে গেলে গল্পকথক কষ্ট পান কেন? বুঝিয়ে লেখ ।
গ. উদ্দীপকের সুজিতের মায়ের সাথে ‘আহ্বান’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য দেখা যায়?
ঘ. “উদ্দীপকে ‘আহ্বান’ গল্পের বাস্তবতার চিত্র ফুটে উঠেছে।”— বিশ্লেষণ কর।
ক. জ্ঞান
বুড়ি হাজরা ব্যাটার বউয়ের কাছ থেকে দুধ চেয়ে এনেছিল ।
খ. অনুধাবন
বুড়ি অনেক স্নেহ করেন বলেই দুধ এনেছিলেন, তা গল্পকথক পরে বুঝতে পেরে কষ্ট পান । গল্পকথক অনেক দিন পর পর গ্রামের বাড়িতে যেতেন। কিন্তু গ্রামে গেলেই বুড়ি তার খাওয়া-দাওয়ার খোঁজখবর নেন ও তার গোপালের জন্য সাধ্যের মধ্যে নানান রকম খাবার নিয়ে আসেন। গল্পকথক দুধ ভালো খেতে পাচ্ছেন কিনা তা জানতে চায় এবং বৃদ্ধা বুঝতে পারে গল্পকথক ভালো দুধ কোথাও পাচ্ছেন না। তাই বৃদ্ধা একজনের কাছ থেকে দুধ চেয়ে গল্পকথককে এনে দেয়। বৃদ্ধা দরিদ্র ভেবে গল্পকথক তাকে কিছু টাকা হাতে দেন দুধের দামস্বরূপ। এই টাকা দেওয়ার কারণে বৃদ্ধার মন খারাপ হয়ে যায়। কারণ সে স্নেহ-মমতার কারণে দুধটুকু এনেছিল। বৃদ্ধার স্নেহ-মমতার কথা বুঝতে পেরে গল্পকথকের মন খারাপ হয়ে যায় এবং মনে কষ্ট পান ।
গ. প্রয়োগ
সারকথা : টাকা দেওয়াতে বৃদ্ধার স্নেহের প্রতি অবমাননা করা হয়েছে বলে গল্পকার বুঝতে পেরে পরে কষ্ট পান।
উদ্দীপকের সূজিতের মায়ের সাথে ‘আহ্বান’ গল্পের বৃদ্ধার সাদৃশ্য দেখা যায় । বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ অনেকটাই শৈশবসুলভ আচরণ করে। সে সময় বৃদ্ধদের মন শিশুদের রূপ ধারণ করে। তাই আমাদের চারপাশে বয়স্ক যারা রয়েছেন তাঁদের খোঁজখবর রাখা এবং যত্ন নেওয়া আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। উদ্দীপকে সুজিতের মা অনেক অসুস্থ অবস্থায় সুজিতকে দেখতে চেয়েও পাননি। মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত ছেলেকে দেখার জন্য অপেক্ষা করেছেন। কিন্তু সুজিত আসেনি। যখন সুজিত এসেছে ততক্ষণে তার মা আর বেঁচে নেই।
‘আহ্বান’ গল্পে বৃদ্ধা গল্পকথককে মারা যাওয়ার আগে অনেকবার স্মরণ করে। কিন্তু গল্পকথক গ্রামে আসেন না। অবশেষে বৃদ্ধার মৃত্যুর পরের দিন গল্পকথক গ্রামে আসেন। উদ্দীপকে সুজিতের মা সুজিতের অপেক্ষা করতে করতে মারা যান এবং গল্পে বৃদ্ধা গল্পকথকের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে মারা যায় । তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সুজিতের মায়ের সাথে ‘আহ্বান’ গল্পের বৃদ্ধার সাদৃশ্য দেখা যায় ।
সারকথা : উদ্দীপকে মা ও আলোচ্য গল্পে বৃদ্ধার অপেক্ষার দৃশ্য ফুটে উঠেছে, যা উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্য প্রকাশ করে ।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকে ‘আহ্বান’ গল্পের বাস্তবতার চিত্র ফুটে উঠেছে।”- উক্তিটি যথার্থ।
মানুষকে শ্রদ্ধা করা এবং ভালোবাসা হলো মানবপ্রেম। পৃথিবীতে মানবপ্রেম আছে বলেই সমাজ টিকে আছে। কারণ সমাজে বাস করতে হলে মানুষের সাথে মানুষের সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় থাকা অত্যন্ত জরুরি। আর যখনই এই মানবেপ্রম, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি সমাজ থেকে চলে যায় তখনই সমাজ মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে ওঠে উদ্দীপকে সুজিতকে তার মায়ের অসুস্থতার খবর বারবার দেওয়া হলেও সে সময় করে আসতে পারছিল না। পরবর্তীতে সে যখন আসে তখন আর তার মা বেঁচে নেই।
তার মা তার জন্য পথ চেয়ে থেকে থেকে অবশেষে মৃত্যুবরণ করেন। সুজিত পরে তার অপারগতার জন্য অপরাধবোধে ভুগতে থাকে। ‘আহ্বান’ গল্পে গল্পকথক জানতে পারেন না যে বৃদ্ধা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং তাঁকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন। কিন্তু গল্পকথক অজানা এক টানেই যেন শেষ পর্যন্ত ছুটে যান গ্রামে। গিয়ে দেখেন বৃদ্ধা মারা গেছেন আগের রাতে। গল্পকথক তখন উপলব্ধি করেন যে, বুড়ি বেঁচে থাকলে বলে উঠতেন- অ মোর গোপাল ।
আশাকরি আহ্বান গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে।