প্রিয় শিক্ষার্থীরা, কেমন আছো? আশা করি সকলেই ভালো আছো। আজকে তোমাদের রসায়নের ধারণা অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে আলোচনা করবো। তো চলো শুরু করা যাক।
রসায়নের ধারণা অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
রসায়ন বিজ্ঞান কী? | পদার্থের গঠন, ধর্ম ও পরিবর্তন সম্পর্কে অধ্যয়ন |
রসায়নের গুরুত্ব কী? | খাদ্য, ঔষধ, পরিবেশ, উৎপাদন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ |
ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্যে পার্থক্য কী? | ভৌত পরিবর্তনে গঠন পরিবর্ত হয় না, রাসায়নিক পরিবর্তনে নতুন পদার্থ সৃষ্টি হয় |
পদার্থের মৌলিক কণিকাগুলো কী কী? | পরমাণু, প্রোটন, নিউট্রন, ইলেকট্রন |
পর্যায় সারণি কী? | মৌলগুলোকে তাদের পারমাণবিক সংখ্যা ও ধর্ম অনুযায়ী সাজানো টেবিল |
রাসায়নিক বিক্রিয়া কী? | এক বা একাধিক পদার্থ ভেঙে নতুন পদার্থ সৃষ্টির প্রক্রিয়া |
প্রশ্নঃ রসায়নের ধারণা ব্যাখ্যা করো?
উত্তরঃ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার মধ্যে রসায়ন অন্যতম। রসায়নকে জীবনের জন্য বিজ্ঞান বলা হয়। প্রাচীন কাল থেকে রসায়নচর্চার মান বেড়েই চলেছে। প্রাচীন আল-কেমিদের রসায়ন চর্চা বর্তমান রসায়নের জন্ম দিয়েছে। কারণ রসায়নের চাহিদা ব্যাপক। মানব জাতি ও পরিবেশের কল্যাণে রসায়ন সর্বদা নিয়োজিত।
প্রশ্নঃ রসায়নচর্চা কখন হয়?
উত্তরঃ রসায়নচর্চা কয়েক সহস্রাব্দ থেকে হয়ে আসছে। ভারতবর্ষে প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বেই কাপড়কে আকর্ষণীয় করার জন্য রঙ এর ব্যবহার শুরু হয়েছিল। পুরাতন সভ্যতায় রসায়ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে খনিজ থেকে মূল্যবান ধাতু আহরণ করা হতো।
প্রশ্নঃ রসায়নকে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বলা হয় কেন?
উত্তরঃ বিজ্ঞানের সব শাখার সাথে রসায়নের নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। মেডিকেল সাইন্সে জীবনের রহস্য বুঝতে, রোগ-ব্যাধির কারণ অনুসন্ধান, এর নিরাময় এবং পথ্য নিরূপণে রসায়ন অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। পদার্থ বিজ্ঞান মূলত কাজ করে বস্তু নিয়ে, যা পরমাণু ও অণু দ্বারা গঠিত। সুতরাং পদার্থ বিজ্ঞানে নিখুঁত জ্ঞান চর্চার জন্য রসায়নের সহায়তা দরকার। কম্পিউটার বিজ্ঞানের মূলে রয়েছে সেমিকন্ডাক্টর ও কম্পিউটার চিপস এবং LCD তে প্রয়োজন হয় তরল স্ফটিক। এগুলোর প্রস্তুতি ও বিশোধনে রসায়ন মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এ সব কারণেই রসায়নকে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বলা হয়।
প্রশ্নঃ উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরার পর কি হয়?
উত্তরঃ উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরার পর দেহের পচন হয় এবং নানা অণুজীব দ্বারা মাটির সাথে মিশে যায়। ভূগর্ভের বিশেষিত তাপ ও চাপের প্রভাবে মাটিতে মিশে যাওয়া পদার্থের আরও রাসায়নিক পরিবর্তন হয়। ফলে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ তৈরী হয়।
প্রশ্নঃ কাঠ জ্বালানোর অর্থ কার্বন যৌগের দহন ব্যাখ্যা কর?
উত্তরঃ কাঠ হলো প্রধানত সেলুলোজ দিয়ে গঠিত, কার্বন এর যৌগ। সুতরাং, কাঠে আগুন জ্বালালে তা বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস, জলীয় বাস্প ও তাপ উৎপন্ন করে। সুতরাং, কাঠ জ্বালানোর অর্থই হলো কার্বন যৌগের দহন।
প্রশ্নঃ কাঠ, কয়লা পোড়ানো একটি রাসায়নিক পরিবর্তন ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ কাঠ, কয়লা মূলত কার্বনের যৌগ। এগুলো পোড়ানোর অর্থ প্রধানত কার্বনের দহন। আর যেকোনো দহন রাসায়নিক পরিবর্তন।
বিক্রিয়াঃ C + O2 = CO2 + তাপ।
বিক্রিয়ায় কার্বনের দহনে CO2 গ্যাস উৎপন্ন হয় যা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি পদার্থ। এ বিক্রিয়ায় কার্বন অণুর গঠনেরও পরিবর্তন হয়। তাই কাঠ, কয়লা পোড়ানো একটি রাসায়নিক পরিবর্তন।
প্রশ্নঃ পোষাক শিল্পে রসায়নের পরিধি কিভাবে বিবেচনা করবে?
উত্তরঃ পোশাক শিল্পে উৎপাদিত পন্নের মধ্যে শার্ট, প্যান্ট ও উল রয়েছে। এগুলো জৈব যৌগ ও তন্তুর সম্বনয়ে গঠিত। রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন যৌগ হতে তন্তসমূহ সংগ্রহ করা হয়, যা রসায়নের অংশ। আবার এসকল কৃত্তিম বা প্রাকৃতিক তন্তুর সাথে রঞ্জকের সমন্বয় করে টেক্সটাইল ফেব্রিকস শিল্পে পোশাক তৈরি করা হয়। তন্তুর সাথে রঞ্জকের সমন্বয় =, তাও রসায়ন বিজ্ঞানের অংশ।
প্রশ্নঃ রসায়নের সাথে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার সম্পর্ক লেখো।
উত্তরঃ জীব বিজ্ঞানের সাথে রসায়ন গভীরভাবে জড়িত। নিম্মে দুটি সম্পর্ক উল্লেখ করা হলোঃ
i) উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সবুজ অংশে গ্লুকোজ তৈরি করে। এটি একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া। উদ্ভিদ ক্লোরোফিলের সাহায্যে সূর্যালোকের উপস্থিতিতে পানি ও কার্বন ডাই অক্সাইডের বিক্রিয়া ঘটিয়ে গ্লুকোজ তৈরি করে।
ii) আবার বিভিন্ন জীব যে খাদ্য তৈরি করে শ্বনের মাধ্যমে ভেংগে শক্তি ও কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করে। এটিও একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া। জীব শ্বসনের মধ্যেমে শর্করা, প্রোটিন ভেঙ্গে যথাক্রমে গ্লুকোজ, অ্যামাইনো এসিড উৎপন্ন করে যা একটি রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়।
সুতরাং, বলা যায় যে, জীব বিজ্ঞান ও রসায়ন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।
প্রশ্নঃ রসায়নের সাথে পদার্থ বিজ্ঞানের কি ধরণের সম্পর্ক রয়েছে ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ রসায়ন ও পদার্থ বিজ্ঞান হলো বিজ্ঞানের ভিন্ন ভিন্ন দুটি শাখা। তবে এদের মধ্যে ব্যাখ্যা প্রদান বা তত্ত্বীয় ধারণা প্রভৃতির ক্ষেত্রে একটি অপরটি উপর নির্ভরশীল। যেমনঃ তাপ ও বিদ্যুৎ এর তত্ত্বীয় ব্যাখ্যা পদার্থবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। কিন্ত এই তাপ থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে তা আবার ধাআতব তারে প্রবাহ ইলেক্ট্রন স্থানান্তরের মাধ্যমে হয় যা রসায়নের আলোচ্য বিষয়।
তেমনি কম্পিউটার, চুম্বক ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রনীয় সামগ্রী, উৎপাদন ও ব্যবহার পদার্থ বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। কিন্ত এই সব সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেলে তার পুনর্ব্যবহার করার প্রক্রিয়াটি রসায়ন চর্চার মাধ্যমেই সম্ভব। সুতরাং, একথা বলা বাহুল্য যে রসায়ন বিজ্ঞানের সাথে পদার্থ বিজ্ঞানের সম্পর্ক বিদ্যমান।
প্রশ্নঃ দৈনন্দিন জীবনে রসায়নের ব্যবহার লেখো?
উত্তরঃ মানব জীবনে রসায়নের বিস্তৃতি ব্যাপক, যা মানব সেবায় নিয়োজিত। মানুষের জীবনের সর্বক্ষেত্রে রসায়ন বিরাজমান। আমরা নিঃশ্বাসে অক্সিজেন গ্রহণ করি এবং ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করে পানি দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নিই। তারপর খাবার টেবিলে খাবার খাই। পেন্সিল ও খাতা কলম নিয়ে পড়তে বসি, অর্থাৎ সব ক্ষেত্রেই রসায়ন ব্যবহারের অবদান রয়েছে।
প্রশ্নঃ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব লেখো?
উত্তরঃ মানুষের মৌলিক চাহিদা যেমন – অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার উপকরণ জোগানো রসায়ন সার্বক্ষণিক নিয়োজিত। এখানে উল্লেখ্য যে, রাসায়নিক পদার্থ মানেই ক্ষতিকারক এমন ধারণা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে আছে, যা ভ্রান্ত। আমরা যা খাচ্ছি, যেমন – ভাত, ডাল, তেল, চিনি, লবণ এবং বিভিন্ন পরিষ্কার সামগ্রী যা ব্যবহার করছি। যেমন – সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু, পাউডার এছাড়া বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র ইত্যাদি সবই রাসায়নিক পদার্থ। তাই রসায়ন পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রশ্নঃ রাসায়নিক সারের প্রভাব বর্ণ্না করো।
উত্তরঃ রাসায়নিক সারে উদ্ভিদের বৃদ্ধি সহায়ক বিভিন্ন উপাদান বিদ্যমান থাকে। যেমন অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম ইত্যাদি। এ কারণে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কিন্ত রাসায়নিক সারের অতিরিক্ত ব্যবহারে উদ্ভিদের ক্ষতি হয় এবং পরিবেশের দূষণ ঘটে।
প্রশ্নঃ শিল্প কারখানায় রসায়নের ব্যবহার লেখো।
উত্তরঃ বর্তমান যুগে রসায়নের পরিচিতি শুধুমাত্র শিল্প-কারখানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে রসায়ন রয়েছে। যেমন – শিল্প কারখানায় তেল, চিনি, কাগজ, কলম, ওষুধপত্র, কাপড়, শ্যাম্পু, সাবান, রড সিমেন্ট থেকে শুরু করে ব্যবহার্য অনেক সামগ্রী তৈরি রসায়নের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ বর্তমান পৃথিবীতে গবেষণার গুরুত্ব কি?
উত্তরঃ বিজ্ঞানের কল্যাণে আজ মানুষের জীবন হয়েছে সুন্দর। সহজ হয়েছে সকল কাজ, উন্নত হয়েছে জীবন যাত্রার মান। শিক্ষা, চিকিতসা, যোগাযোগ সহ সকল ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবসান অপরিসীম। বিজ্ঞানের এ ভূমিকা একমাত্র সম্ভব হয়েছে গবেষণার দ্বারা। তাই প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও উন্নতির জন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই।
প্রশ্নঃ রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে পরীক্ষণের পূর্বে প্রাথমিক জ্ঞান জরুরী কেনো?
উত্তরঃ অনেক রাসায়নিক পদার্থ স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিকর। অনেক দ্রব্য আছে অতি সহজেই বিস্ফোরিত হতে পারে। বিষাক্ত, দাহ্য, স্বাস্থ্য সংবেদনশীল বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী। তাই রাসায়নিক দ্রব্য সংগ্রহ ও তা দিয়ে পরীক্ষণের পূর্বেই তার কার্যকরিতা সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান থাকা খুবই জরুরী।
প্রশ্নঃ গবেষণা কার্যক্রমে পরীক্ষণ ও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ বলতে কি বোঝ।
উত্তরঃ রসায়নে অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষণ নির্ভর। পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেই বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়। পরীক্ষণ কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজন হয় প্রয়োজনীয় রাসায়নিক ও অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ, পরীক্ষণের ফলে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা প্রদান এবং ফলাফল নিশ্চিতকরণ।
প্রশ্নঃ বৃত্তের উপর আগুনের শিখা সাংকেতিক চিহ্ন দ্বারা আমরা কি বুঝি?
উত্তরঃ বৃত্তের উপর আগুনের শিখা সাংকেতিক চিহ্ন দ্বারা জারক পদার্থকে বোঝানো হয়।
দাহ্য পদার্থসমূহ সাধারণত জারক পদার্থের সংস্পর্শে আসলে বিস্ফোরণ ঘটায়। এ চিহ্ন ধারণকারী পদার্থ যেহেতু অন্য পদার্থকে জারিত করতে পারে তাই যেসব পদার্থ জারক সংবেদনশীল। তাদেরকে এদের থেকে যথাসম্ভব নিরাপদ দূরত্বে সংরক্ষণ করতে হবে এবং ব্যবহারের সময় যেন দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব পদার্থ নিয়ে কাজ করার সময় অ্যাপ্রোন পরতে হবে। যেমন – O2, H2O2, HNO3, KMnO4, KNO3 হলো এ ধরণের জারক পদার্থ।
প্রশ্নঃ রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাবগুলো কী?
উত্তরঃ রসায়নের বিভিন্ন পরীক্ষাকার্যে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। তবে এই ব্যবহার সঠিকভাবে না হলে তা মানবজীবন ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কারণ হয়।
i) মাছ, মাংস পচনরোধ এবং ফলমূলের পরিপক্কতা আনায়নে বা পাকাতে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার হয় যা, স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
ii) বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য প্রিজারভেটিভস ব্যবহ্রত হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
iii) অতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার গাছের ক্ষতি করে।
iv) কৃ্ত্রিম কসমেটিকস, রঙ ও ভেষজ ইত্যাদির ব্যবহারের ফলে রক্তের মাধ্যমে ক্ষতিকর পদার্থ আমাদের শরীরে প্রবশ করে।
প্রশ্নঃ বিস্ফোরিত দ্রব্য ব্যাবহারের সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় কেন?
উত্তরঃ বিস্ফোরক দ্রব্যসমূহ সবসময় অস্থিত এবং নিজে নিজেই বিক্রিয়া করতে পারে। যেমনঃ জৈব পার অক্সাইড, যা নিজে নিজেই বিক্রিয়া করে। ফলে যে কোন সময় যে কোন ধরণের বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বড় ধরণের কোন দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এসব বিস্ফোরক দ্রব্যকে উচিত নির্জনে ও স্থিত জায়গায় সংরক্ষণ করা, সাবধানে নাড়াচাড়া করা, ঘর্ষণ হতে পারে এমন অবস্থান এড়িয়ে রাখা, অন্য কারো সাথে মিশ্রণের সময় অতি ধীরে যুক্ত করা ইত্যাদি বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত।
প্রশ্নঃ রসায়ন বিজ্ঞানাগারে অ্যাপ্রোন পরতে হয় কেন?
উত্তরঃ রসায়ন বিজ্ঞানাগারে নিম্মলিখিত কারণে অ্যাপ্রোন পরতে হবে –
i) এসিড বা ক্ষার গায়ে পড়লে শরীরে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে বা পোষাকে পরলে পোশাক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই শরীর ও পোশাককে রক্ষা করার জন্য অ্যাপ্রোন পরতে হবে।
ii) শিক্ষার্থী যদি ল্যাবে অন্য জামা কাপড়ের উপর অ্যাপ্রোন পরিধান করে কাজ করার মানসিক পূর্ব প্রস্তুতি লাভ করে ও তাছাড়া দ্রব্যের স্পর্শ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
প্রশ্নঃ রসায়নগারে জারক পদার্থ ব্যবহারের সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় কেন?
উত্তরঃ জারক পদার্থ যেমন – ক্লোরিন গ্যাস নিঃশ্বাসে গেলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে, ত্বকে লাগলে ক্ষত হতে পারে। আবার জারক পদার্থটি গ্যাস হলে নিচ্ছিদ্রভাবে রাখতে হবে, যেন পাত্রে থাকাকালীন অবস্থায় জারণ বিক্রিয়া করতে না পারে।
সাবধানতাঃ ব্যবহারের সময় অবশ্যই হাতে দস্তানা, চোখে নিরাপদ চশমা ও নাকে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
প্রশ্নঃ রাসায়নিক দ্রব্য সংবলিত পাত্রের গায়ে লেভেলের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে লিখো।
উত্তরঃ রাসায়নিক দ্রব্য সংবলিত পাত্রের গায়ে লেভেলের প্রয়োজনীয়তা নিম্মরূপ –
- i) রাসায়নিক দ্রব্যের কার্যকারিতা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ।
- ii) দ্রব্যটি স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিনা – সে সম্পর্কে জ্ঞান লাভ।
প্রশ্নঃ ট্রিফয়েল চিহ্ন দ্বারা কী বুঝানো হয়?
উত্তরঃ ট্রিফয়েল একটি আন্তর্জাতিক রশ্নি চিহ্ন যা দ্বারা তেজস্ক্রিয়তা বুঝানো হয়। কোনো বস্তুর গায়ে এ চিহ্ন লাগানো থাকলে বুঝতে হবে বস্তুটিতে তেজস্কিয় পদার্থ রয়েছে। এ রশ্নি মানব দেহকে বিকলাঙ্গ করে দিতে পারে এবং শরীরের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরণের তেজস্ক্রিয় রশ্নির ক্ষতিকর প্রাভাব থেকে নিরাপদ থাকার জন্য নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা, উপযুক্ত পোশাক ও চোখে বিশেষ চশমা পরতে হয়।
রসায়নের ধারণা অধ্যায়ের অনেক কিছুই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, যদি আরো কিছু বাদ পড়ে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আর এই রকম আরো সেইম কন্টেন্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।