প্রিয় শিক্ষার্থীরা, কেমন আছো? আশা করি সকলেই ভালো আছো। আজকে তোমাদের রাসায়নিক বন্ধন অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে আলোচনা করবো। তো চলো শুরু করা যাক।
প্রশ্ন. সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক আয়নিক যৌগ অপেক্ষা কম কেন?
উত্তর: আয়নিক যৌগে প্রতিটি আয়ন তার চতুর্দিকে বিপরীত আধান যুক্ত আয়ন দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। তাই এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক অনেক বেশি। সমযোজী যৌগের অণুসমূহ একে অন্যের সাথে দুর্বল ভ্যানডার ওয়ালস শক্তিদ্বারা আকৃষ্ট থাকে। ফলে এদেরকে তরল বা বায়বীয় অবস্থায় রূপান্তরিত হওয়ার সময় কেবল এই ভ্যানডার ওয়ালস শক্তিকে ছিন্ন করতে হয়। তাই সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক আয়নিক যৌগ অপেক্ষা কম ।
প্রশ্ন-৫৪. কঠিন অবস্থায় NaCl তড়িৎ বিশ্লেষণে অংশগ্রহণ করে না কেন ?
উত্তর : বিগলিত বা দ্রবীভূত তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহনের সময় সেই যৌগের রাসায়নিক পরিবর্তনকে তড়িৎ বিশ্লেষণ বলে । তাই, NaCl তড়িৎ বিশ্লেষণের জন্যে আয়ন প্রয়োজন হয় । যখন NaCl কে দ্রবীভূত করা হয় তখন NaCl যৌগটি Na+ এবং CI আয়নে পরিণত হয় এবং বিদ্যুৎ পরিবহন করে। কঠিন অবস্থায় NaCl কোন আয়ন প্রদান করতে পারে না । তাই কঠিন অবস্থায় NaCl এর তড়িৎ বিশ্লেষণ হয় না ।
প্রশ্ন-৫৫. কিছু কিছু সমযোজী যৌগ পানিতে দ্রবীভূত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : কিছু কিছু সমযোজী যৌগ পানিতে দ্রবীভূত হয়। বন্ধন গঠনের পর পানির অণুতে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন পরমাণুর মধ্যবর্তী শেয়ারকৃত ইলেকট্রনকে উভয় পরমাণুর নিউক্লিয়াস আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ করার ক্ষমতা হাইড্রোজেন অপেক্ষা অক্সিজেনের বেশি। তাই বন্ধনের শেয়ারকৃত ইলেকট্রন যুগল অক্সিজেনের দিকে ঝুকে যায় ফলে অক্সিজেনে আংশিক ঋণাত্মক ও হাইড্রোজেনে আংশিক ধনাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয়। একে সমযোজী যৌগের পোলারিটি বলে । আয়নিক যৌগসমূহ পোলার হওয়ায় তারা অধিকাংশই পানিতে দ্রবীভূত হয়। একইভাবে কিছু কিছু সমযোজী যৌগ যেমন অ্যালকোহল, চিনি ইত্যাদিতেও পোলারিটি বিদ্যমান থাকায় তারা পানিতে দ্রবীভূত হয়।
প্রশ্ন-৫৬. আয়নিক যৌগগুলো পানিতে দ্রবণীয়- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : আমরা জানি, পানি একটি পোলার দ্রাবক। আবার আয়নিক যৌগগুলো ইলেকট্রন আদান-প্রদানের ফলেই সৃষ্টি হয়। ফলে আয়নিক যৌগে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক প্রান্ত থাকে। আয়নিক যৌগের এই ধনাত্মক প্রান্ত পানির ঋণাত্মক অক্সিজেন দ্বারা এবং ঋণাত্মক প্রান্ত ‘পানির ধনাত্মক প্রান্ত দ্বারা আকর্ষিত হয়। ফলে আয়নিক যৌগ পানিতে দ্রবীভূত হয়।
প্রশ্ন-৫৭. KCI এর গলনাঙ্ক বেশি কেন ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : আমরা জানি, আয়নিক যৌগের গলনাঙ্ক বেশি। এখানে KCl হলো একটি আয়নিক যৌগ।। কারণ K তার যোজ্যতাস্তর হতে Cl কে একটি ইলেকট্রন দান করে KCI যৌগ সৃষ্টি করে। যৌগটির মধ্যে বিপরীত আয়নসমূহ প্রবলভাবে আকৃষ্ট হয়ে যে ক্রিস্টাল ল্যাটিস গঠন করে তা দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে। তাপ প্রয়োগ করে তাই KCI কে সহজে গলানো যায় না। ফলে KCI যৌগকে গলাতে হলে উচ্চ তাপমাত্রার প্রয়োজন । তাই KCI এর গলনাঙ্ক বেশি ।
প্রশ্ন-৫৮, আয়নিক যৌগগুলো গলিত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : তড়িৎ পরিবহনের জন্যে আয়নসমূহের চলাচল দরকার যা কঠিন অবস্থায় সম্ভব না। গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় আয়নিক যৌগগুলো ধনাত্মক (ক্যাটায়ন) ও ঋণাত্মক (আনায়ন) আয়নে বিশ্লেষিত হয়। ফলে গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় আয়নগুলো চলাচল করতে পারে। তাই আয়নিক যৌগগুলো গলিত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে।
প্রশ্ন-৩০. নিষ্ক্রিয় গ্যাস ব্যতীত অন্যান্য মৌল অণু গঠন করলেও নিষ্ক্রিয় গ্যাস করে না কেন?
উত্তর : অণু গঠিত হয় ইলেকট্রন আদান প্রদান বা শেয়ারের মাধ্যমে । সকল মৌল তার সর্ববহিঃস্থ স্তরে অষ্টক পূরণ করে স্থিতিশীল হতে চায়। ফলে তারা সর্ববহিঃস্থ স্তরের ইলেকট্রন আদান প্রদান বা শেয়ার করে এবং অণু গঠন করে। কিন্তু নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সর্ববহিঃস্থ স্তরে অষ্টক পূর্ণ থাকে তাই এরা স্থিতিশীল। ফলে তারা ইলেকট্রন আদান প্রদান বা শেয়ার করে না এবং অণুও গঠন করে না ।
প্রশ্ন-৩১. নিষ্ক্রিয় মৌলের যোজনী শূন্য ধরা হয় কেন?
উত্তর : যোজনী হলো মৌলের বন্ধন গঠনের ক্ষমতা। নিষ্ক্রিয় মৌলসমূহ অষ্টক পূর্ণ থাকায় (হিলিয়াম, নিয়ম, আর্গন) অন্য কোন মৌলের সাথে কোন রকম বন্ধন তৈরি করে না এমনকি নিজেদের সাথেও বন্ধন তৈরি করে না। তাই এদের যোজনী শূন্য ধরা হয়। আবার নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলো বাতাসে মুক্ত অবস্থায় পরমাণু আকারে থাকতে পারে।
প্রশ্ন-৩২. রাসায়নিক বন্ধন বলতে কী বোঝ ?
উত্তর : রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় দুটি পরমাণুর বহিঃস্তরে এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জন বা শেয়ার দ্বারা উভয় পরমাণুই নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় গ্যাসের স্থিতিশীল দ্বিত্ব বা অষ্টক কাঠামো লাভ করলে পরমাণুদ্বয়ের মধ্যে সৃষ্ট যে শক্তি তাদেরকে যুক্ত করে অণু গঠন করে তাকে রাসায়নিক বন্ধন বলে। যেমন, রাসায়নিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে হাইড্রোজেন অণু গঠন করে ।
প্রশ্ন-৩৪. আয়নিক বন্ধনে ধাতব মৌলটি ধনাত্মক চার্জে চার্জিত হলেও অধাত মৌলটি ঋণাত্মক চার্জে চার্জিত থাকে— ব্যাখ্যা করো ।
উত্তর : কোনো মৌল ইলেকট্রন ত্যাগ করলে তা ধনাত্মক চার্জে এবং ইলেকট্রন গ্রহণ করলে তা ঋণাত্মক চার্জে চার্জিত হয়। আয়নিক যৌগ একটি ধাতব ও একটি অধাতব মৌলের সমন্বয়ে গঠিত আয়নিক বন্ধনে ধাতব মৌলটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে এবং অধাতব মৌলটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে। ফলে ধাতব মৌলটি ধনাত্মক এবং অধাতব মৌলটি ঋণাত্মক চার্জে চার্জিত হয়।
প্রশ্ন-৩৫. Be থেকে কেন ইলেকট্রন ত্যাগ করতে প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়?
উত্তর : Be এর আকার খুব ছোট হওয়ায় এর বহিঃস্তরের ইলেকট্রনের প্রতি নিউক্লিয়াসের প্রবল আকর্ষণ থাকে। এ প্রবল আকর্ষণের কারণেই Be থেকে ইলেকট্রন ত্যাগ করতে প্রবল শক্তির প্রয়োজন হয়।
প্রশ্ন-৩৬. ম্যাগনেসিয়াম আয়নিক যৌগ গঠন করে কেন?
উত্তর : ম্যাগনেসিয়াম আয়নিক যৌগ গঠন করে। কারণ, ম্যাগনেসিয়াম পরমাণুর শেষ স্তরে দুইটি ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকায় এটি সহজেই উক্ত ইলেকট্রন দুটি ত্যাগ করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস Ne এর ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে। তাছাড়া Mg একটি ধাতব পরমাণু। ফলে এটি তড়িৎ ধনাত্মক যৌগ গঠন করে। কিন্তু ইলেকট্রন শেয়ার করতে পারে না। তাই Mg সমযোজী যৌগ গঠন করে না।
প্রশ্ন-২৬. CH, বন্ধন গঠনকালে একটি মৌল অষ্টক নিয়ম অনুসরণ করলেও অপর মৌল দুইয়ের নিয়ম অনুসরণ করে’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : মিথেন (CH4) যৌগ গঠনে কেন্দ্রীয় মৌল কার্বন পরমাণু অষ্টক নিয়ম ও হাইড্রোজেন পরমাণু দুইয়ের নিয়ম অনুসরণ করে। ‘CH 4 অণুতে কার্বন চারটি শেয়ার ইলেকট্রন পেয়ে কার্বন অষ্টক পূর্ণ করে অষ্টক নিয়ম অনুসরন করে এবং কার্বনের বহিঃস্থ স্তরে ইলেকট্রনের সাথে হাইড্রোজেন ইলেকট্রন শেয়ার করে দুইয়ের বিন্যাস অর্জন করে।
প্রশ্ন-২৭. নিষ্ক্রিয় গ্যাসীয় মৌলসমূহ রাসায়নিকভাবে কেন নিষ্ক্রিয়?
উত্তর: পর্যায় সারণীতে গ্রুপ-18 তে অবস্থিত মৌলসমূহকে নিষ্ক্রিয় মৌল বলা হয়। এই গ্রুপে অবস্থিত মৌলসমূহ হলো— হিলিয়াম (He), নিয়ন (Ne), আর্গন (Ar), ক্রিপ্টন (Kr), জেনন (Xe) এবং রেডন (Rn)। এদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকায় এরা ইলেকট্রন আদান-প্রদান বা শেয়ারের মাধ্যমে যৌগ গঠনে সক্রিয়তা প্রদর্শন করে না। অর্থাৎ বন্ধন গঠনে বা রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রতি এই মৌলসমূহ নিষ্ক্রিয় আচরণ করে।
প্রশ্ন-২৮. হিলিয়াম নিষ্ক্রিয় গ্যাস-ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: হিলিয়ামের সাধারণ ইলেকট্রন বিন্যাস (২) অর্থাৎ এটির সর্বশেষ শক্তিস্তরে ২টি ইলেকট্রন থাকে। ইলেকট্রনদ্বয় দ্বিত্ত্বপূর্ণ থাকায় হিলিয়ামের পক্ষে ইলেকট্রন ত্যাগ, গ্রহণ বা শেয়ার করা সম্ভব হয় না। এজন্য এটি যৌগ গঠনে কোনো আগ্রহ পোষণ করে না। অর্থাৎ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় হিলিয়াম গ্যাস নিষ্ক্রিয় মৌল হিসেবে থাকে ।
প্রশ্ন-২৯. নিয়ন নিষ্ক্রিয় কেন, ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : নিয়নের পারমাণবিক সংখ্যা 10। এর ইলেকট্রন বিন্যাস হলো- 10 Ne – 1s2 2s2 2p 6। ইলেকট্রন বিন্যাস হতে দেখা যায়, Ne এর শেষ কক্ষপথে ৪টি ইলেকট্রন বিদ্যমান। এটি Ne এর জন্য অত্যন্ত স্থিতিশীল ইলেকট্রনীয় কাঠামো। এ স্থিতিশীল ইলেকট্রন কাঠামোর জন্য Ne অন্য কোনো মৌলের সাথে ইলেকট্রন ত্যাগ অথবা গ্রহণ বা শেয়ার করেনা। অর্থাৎ রাসায়নিক বন্ধন তৈরি করে না । তাই নিয়ন অন্য কারও সাথে কোনোরূপ বিক্রিয়া না করে নিষ্ক্রিয় অবস্থা প্রদর্শন করে।
প্রশ্ন-৬১. ইলেকট্রন সাগর’ কী ধাতব বন্ধনের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : সকল ধাতুরই সর্বশেষ শক্তিস্তরে কম সংখ্যক ইলেকট্রন থাকে। ধাতব কেলাসে এই ইলেকট্রনগুলো পরমাণুর কক্ষপথ থেকে বের হয়ে সমগ্র ধাতবখণ্ডে মুক্তভাবে চলাচল করে। এই ধরনের ইলেকট্রনকে সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন বলে। বিমুক্ত ইলেকট্রনগুলো কোনো নির্দিষ্ট পরমাণুর অধীনে থাকে না। বরং সমগ্র ধাতব খন্ডের হয়ে যায়। ফলে ইলেকট্রন হারিয়ে ধাতুর পরমাণুগুলো ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয়ে এক ত্রিমাত্রিক কেলাসে অবস্থান করে। তখন এক ‘ইলেকট্রন সাগরে’ আয়নগুলো নিমজ্জিত আছে বলে মনে হয়।
প্রশ্ন-৬২. ধাতব বন্ধন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ধাতুর স্ফটিক ল্যাটিসে ধাতুর পরমাণুসমূহ তাদের বহিস্তরে শিথিলভাবে যুক্ত ইলেকট্রনগুলো ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয়। বিচ্ছিন্ন ইলেকট্রনগুলো যেন এক ইলেকট্রন সমুদ্র সৃষ্টি করে। আর সৃষ্ট ধনাত্মক আয়নগুলো এরূপ ইলেকট্রন সমুদ্রে ভেসে থাকে। মধ্যবর্তী স্থানে বিরাজমান ইলেকট্রনসমূহ এবং ধনাত্মক আয়নগুলো পরস্পর বিপরীত চার্জমুক্ত বলে তাদের মধ্যে এক ধরনের স্থির বিদ্যুৎ আকর্ষণ শক্তির উদ্ভব ঘটে। যা তাদের যুক্ত করে স্ফটিক গঠন করে। আর এভাবে সৃষ্ঠ বন্ধনই ধাতব বন্ধন নামে পরিচিত।
প্রশ্ন-৬৩. কীভাবে পারমাণবিক শাঁস গঠিত হয়?
উত্তর : প্রত্যেক ধাতব পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাসের সর্বশেষ শক্তিস্তরে সাধারণত 1, 2 বা 3 টি ইলেকট্রন থাকে এবং এদের আকার একই পর্যায়ের অধাতব পরমাণুর চেয়ে বড় হওয়ায় ধাতব পরমাণুর সর্বশেষ শক্তিস্তরের প্রতি নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ অনেক কম হয়। ফলে ধাতুতে পরমাণুসমূহ সর্বশেষ শক্তিস্তরের এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে পারমাণবিক শাঁসে পরিণত হয়।
প্রশ্ন-৬৪. গ্রাফাইট অধাতু হওয়া সত্ত্বেও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: গ্রাফাইটে সৃষ্ট তিনটি সংকর অরবিটাল দ্বারা প্রতিটি কার্বন পরমাণু অপর তিনটি কার্বন পরমাণুর সাথে যুক্ত হয়। তা সত্ত্বেও প্রতিটি কার্বন পরমাণুতে একটি করে অযুগ্ম ইলেকট্রন থাকে সমগ্র জালিতে অর্থাৎ অণুতে সঞ্চরণ করতে পারে । এজন্য গ্রাফাইট বিদ্যুৎ সুপরিবাহী।
প্রশ্ন-৬৬. কয়েকটি ধাতব বৈশিষ্ট্য লেখো ।
উত্তর : কয়েকটি ধাতব বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:
i. পৃষ্ঠ চকচকে হয়
ii. নমনীয় হয়
iii. তাপ ও তড়িৎ সুপরিবাহী হয়
iv. বিজারক হিসেবে কাজ করে
v. আয়নিক বন্ধন গঠন করে
প্রশ্ন-৬৭. ধাতু বিদ্যুৎ সুপরিবাহী কেন?
উত্তর : ধাতব কেলাসে ধাতু পরমাণুসমূহ একত্রে পাশাপাশি অবস্থান করে। সকল ধাতুরই শেষ কক্ষপথে কমসংখ্যক ইলেকট্রন থাকে। কিন্তু ধাতব কেলাসের অভ্যন্তরীণ ইলেকট্রনসমূহ স্বাধীনভাবে চলাচল করে। ফলে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের প্রভাবে বা ধাতব খন্ডকে ব্যাটারির সাথে যুক্ত করে বর্তনী পূর্ণ করলে সহজেই বর্তনীর ঋণাত্মক প্রান্ত থেকে মুক্ত ইলেকট্রনসমূহ ধনাত্নক প্রান্তের দিকে চলাচল করে এবং বিদ্যুৎ পরিবাহিত হয় ।
প্রশ্ন-৩১. পোলারিটি কী?
উত্তর: সমযোজী যৌগের অণুতে ডাইপোল (এক প্রান্তে ধনাত্মক ও অপরপ্রান্তে ঋণাত্মক) সৃষ্টির ধর্মকে পোলারিটি বলে। অণুর দুই প্রান্তে দুটি ভিন্ন মেরু সৃষ্টি হওয়ায় ঐ অণুকে পোলার অণু বলে ।
প্রশ্ন-৩২. চিনির রাসায়নিক সংকেত লিখ ।
উত্তর: চিনির রাসায়নিক সংকেত হলো C12H22O11
প্রশ্ন-৩৩. পোলার সমযোজী যৌগ কাকে বলে?
উত্তর : যে সমযোজী যৌগে পোলারিটির সৃষ্টি হয় তাকে পোলার সমযোজী যৌগ বলে ।
প্রশ্ন-৩৪. সাধারণত কোন ধরনের যৌগ তড়িৎ পরিবহন করে?
উত্তর : সাধারণত আয়নিক যৌগ গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে ।
প্রশ্ন-৩৫. অপোলার যৌগ কী?
উত্তর : যেসব যৌগ জলীয় দ্রবণে দ্রবীভূত অবস্থায় ধনাত্মক (+) ও ঋণাত্মক (—) প্রান্ত সৃষ্টি করতে পারে না তাদেরকে অপোলার যৌগ বলে ।
প্রশ্ন-৩৬. ধাতব বন্ধন কী?
উত্তর: ধাতব পরমাণুসমূহ যে আকর্ষণ বল দ্বারা পরস্পরের সাথে আবদ্ধ থাকে তাকে ধাতব বন্ধন বলে ।
প্রশ্ন-৩৭. পারমাণবিক শাঁস কী?
আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, ঢাকা। উত্তর : ধাতব কেলাসে ধাতব পরমাণুসমূহ এদের যোজ্যতা স্তরের এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয়। একে পারমাণবিক শাঁস বলে ।
প্রশ্ন-৩৮, ধাতব পরমাণুতে সর্ববহিস্থ স্তরের ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের সাথে কীভাবে আবদ্ধ থাকে ?
উত্তর : ধাতব পরমাণু সর্ববহিস্থ স্তরের ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের সাথে দুর্বলভাবে আবদ্ধ থাকে।
প্রশ্ন-৭. ইলেকট্রন বিন্যাস কাকে বলে?
উত্তর : কোনো পরমাণুর বিভিন্ন স্তরে কয়টি ইলেকট্রন কীভাবে আছে তার প্রকাশকে ইলেকট্রন বিন্যাস বলে ।
প্রশ্ন-৮. নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন যুগল কাকে বলে?
উত্তর : কোন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ স্তরের যে ইলেকট্রন যুগল বন্ধন গঠনে যুক্ত থাকে না, তাকে নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন যুগল বলে ।
প্রশ্ন-৯. বন্ধন শক্তি কাকে বলে?
উত্তর : যেসব মৌলের অণুতে পরমাণুসমূহ এক বিশেষ আকর্ষণ শক্তি দ্বারা পরস্পর আবদ্ধ থাকে তাকে বন্ধন শক্তি বলে ।
প্রশ্ন-১০. যে শক্তির বলে অণুতে পরমাণুগুলো যুক্ত থাকে তাকে কী বলে?
উত্তর : যে শক্তি বলে অণুতে পরমাণুগুলো পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে তাকে বন্ধন বলে।
প্রশ্ন-১১. K’ এর ইলেকট্রন বিন্যাস কী?
উত্তর : K+ এর ইলেকট্রন বিন্যাস হলো- 1s2 2s2 2p 3s 2 3p প্রশ্ন-১২. সোডিয়াম পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাসটি কী? উত্তর : Na এর ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপ—
Na ( 11 ) – 1s2 2s2 2p 6 3s
প্রশ্ন-১৩ আয়ন কাকে বলে?
উত্তর : রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যেসব পরমাণু বা পরমাণুগুচ্ছ এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জনের মাধ্যমে ঋণাত্মক বা ধনাত্মক চার্জগ্রস্ত হয়, তাকে, আয়ন বলে ।
প্রশ্ন-১৪. ক্যাটায়ন কী?
উত্তর: ধনাত্মক চার্জযুক্ত পরমাণুকে ক্যাটায়ন বলে ।
প্রশ্ন-১৫. আয়নিক বন্ধন শক্তি কী?
উত্তর : আয়নিক যৌগে বন্ধনে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন যে স্থির বৈদ্যুতিক শক্তি দ্বারা আবদ্ধ থাকে সে শক্তিকে আয়নিক বন্ধন শক্তি বলে ।
প্রশ্ন-১৬, ধাতু ও অধাতুর মধ্যে কোন বন্ধন গঠিত হয়?
উত্তর: ধাতু ও অধাতুর মধ্যে আয়নিক বন্ধন গঠিত হয়।
প্রশ্ন-১৭. CsF কী ধরনের যৌগ?
উত্তর : CsF আয়নিক যৌগ।
প্রশ্ন-১৮. আয়নিক বন্ধন কাকে বলে?
উত্তর: ইলেকট্রন আদান-প্রদানের মাধ্যমে গঠিত ক্যাটায়ন এবং অ্যানায়নসমূহ যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল দ্বারা যৌগের অণুতে আবদ্ধ থাকে তাকে আয়নিক বন্ধন বলে ।
প্রশ্ন-১৯. সোডিয়াম ক্লোরাইডে কোন ধরনের বন্ধন বিদ্যমান?
উত্তর : সোডিয়াম ক্লোরাইডে-এ আয়নিক বন্ধন বিদ্যমান ।
প্রশ্ন-২০. আয়নিক বন্ধনে ইলেকট্রন দাতা হিসেবে কাজ করে কোন পরমাণু?
উত্তর : আয়নিক বন্ধনে ইলেকট্রনদাতা হিসেবে কাজ করে ধাতব পরমাণু ।