উচ্চমাধ্যমিক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর পদার্থের অবস্থা ও চাপ পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এই গতিবিদ্যাপদার্থের অবস্থা ও চাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছরই এইচএসসি পরিক্ষায় পদার্থের অবস্থা ও চাপ থেকে সৃজনশীল, ও এমসিকিউ প্রশ্ন আসে। আজকের আর্টিকেলে পদার্থের অবস্থা ও চাপ – এইচএসসি – পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
পদার্থের অবস্থা ও চাপ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন- সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত পুকুরের তলদেশে চাপ কীরূপ হবে?
উত্তর: সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত পুকুরের তলদেশের চাপ সমুদ্রের পানির ঘনত্ব, পুকুরের গভীরতা ও অভিকর্ষজ ত্বরণের ওপর নির্ভর করে। সাধারণ পুকুর ও নদীর পানির তুলনায় সমুদ্রের পানির ঘনত্ব বেশি। ফলে একই গভীরতায় সাধারণ পুকুরের তুলনায় সমুদ্র উপকুলে অবস্থিত পুকুরের তলদেশের চাপ বেশি হবে।
প্রশ্ন- ব্যারোমিটারের পারদ স্তম্ভের উচ্চতা থেকে কীভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যায়?
উত্তর: ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা থেকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যায় – নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো :
(i) পারদস্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে কমতে থাকলে বোঝা যাবে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
(ii) পারদস্তম্ভের উচ্চতা হঠাৎ কমে গেলে বুঝতে হবে বায়ুমণ্ডলের চাপ সহসা কমে গেছে এবং ঐ স্থানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। পার্শ্ববর্তী উচ্চস্থান থেকে প্রবল বেগে বায়ু ঐ নিম্নচাপ অঞ্চলে ছুটে
আসবে। সুতরাং ঝড়ের সম্ভাবনা আছে।
(iii) পারদস্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে বাড়লে বুঝতে হবে বায়ুমণ্ডল থেকে জলীয়বাষ্প অপসারিত হচ্ছে। অর্থাৎ আবহাওয়া শুষ্ক ও পরিষ্কার থাকবে।
প্রশ্ন- পর্বতারোহী বেশি উচ্চতায় উঠলে নাক দিয়ে রক্ত আসে কেন?
উত্তর: বেশি উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলীয় চাপের চেয়ে মানুষের রক্তচাপ বেশি থাকে বলে পর্বতারোহী বেশি উচ্চতায় উঠলে নাক দিয়ে রক্ত আসে। ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে ওঠা যায়, বাতাসের ঘনত্ব এবং বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ততই কমে। উঁচু পর্বতের ওপর এই চাপ এতই কমে যায় যে মানবদেহের অভ্যন্তরীণ রক্তচাপের তুলনায় তা অনেক কম হয়। তাই পর্বতারোহী বেশি উচ্চতায় উঠলে নাক দিয়ে রক্ত আসে।
প্রশ্ন- কোনো স্থানে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের পরিবর্তন লেখের মাধ্যমে দেখাও।
উত্তর: ভূ-পৃষ্ঠের সমুদ্র সমতল থেকে যত উপরে উঠা যায়, বায়ুস্তম্ভের ওজন ও ঘনত্ব উভয়ই হ্রাস পায়। ফলে, উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কমতে থাকে। এভারেস্ট পর্বত শৃঙ্গের উপর বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সমুদ্র সমতলের চাপের প্রায় 30%। উচ্চতার সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের পরিবর্তন লেখের মাধ্যমে দেখানো হলো— বায়ুমণ্ডলীয় চাপ (mm Hgp). 76 0 10 20 30 40 উচ্চতা (km)
প্রশ্ন- বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে গেলে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কমে কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: রান্নার সময় জলীয় বাষ্পকে উপরের দিকে উঠে যেতে দেখা যায়। এ থেকে বোঝা যায় বায়ু অপেক্ষা জলীয় বাষ্পের ঘনত্ব কম। এ কারণে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বায়ুর গড় ঘনত্ব হ্রাস পায়। তাই বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে চাপ হ্রাস পায়। প্রশ্ন-৪৪. একটি ভারী বস্তুকে বাতাস অপেক্ষা পানিতে উত্তোলন করা সহজ কেন? ব্যাখ্যা করো ।
প্রশ্ন- বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বায়ুমণ্ডলের চাপ কমে কেন?
উত্তর: জলীয় বাষ্প বায়ু অপেক্ষা হালকা হওয়ায় বায়ুতে পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বায়ুমণ্ডলের চাপ কমে যায়।
প্রশ্ন- স্থিতিস্থাপকতা ব্যাখ্যা কর ।
উত্তর: কোনো বস্তুর উপর বাহ্যিক বল প্রয়োগ করে এর আকার বা আকৃতির পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রযুক্ত বল অপসারণ করে নিলে বস্তুটি যে ধর্মের ফলে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে তাকে স্থিতিস্থাপকতা বলে । যেমন একটি রাবারকে টেনে ছেড়ে দিলে এটি আগের অবস্থায় ফিরে আসে যে ধর্মের জন্য তাই স্থিতিস্থাপকতা ।
প্রশ্ন- পীড়ন ও চাপের মধ্যে পার্থক্য লিখ ।
উত্তর: পীড়ন ও চাপের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
পীড়ন
i. পীড়ন হচ্ছে একক ক্ষেত্রফলে উদ্ভূত প্রত্যয়নী বল।
ii. পীড়ন চাপের উপর নির্ভরশীল
iii. স্থিতিস্থাপক সীমার বাইরে পীড়ন গাণিতিক সূত্র মেনে চলে না ।
চাপ
i. চাপ হচ্ছে একক ক্ষেত্রফলের উপর প্রযুক্ত বল ।
ii. চাপ স্বাধীনভাবে প্রযুক্ত হতে পারে।
iii. চাপ সব সময় গাণিতিক সূত্র মেনে চলে ।
প্রশ্ন- স্থিতিস্থাপক সীমা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বাহ্যিক বল প্রয়োগ করে কোনো বস্তুর আকার বা আয়তন বা উভয়ের পরিবর্তনের চেষ্টা করলে বস্তুটি এই প্রচেষ্টাকে বাধা দেয় এবং বল অপসারিত হলে বস্তু তার পূর্বের আকার বা আয়তন ফিরে পায়। তবে প্রযুক্ত বলের একটা সীমা আছে। যার বেশি বল প্রয়োগ করলে বস্তু আর পূর্বের আকার ফিরে পায় না। এই সীমাই হলো বস্তুর স্থিতিস্থাপক সীমা। স্থিতিস্থাপক সীমার বেশি বাহ্যিক বল প্রয়োগ করলে বস্তুর আকার বা আয়তনের স্থায়ী পরিবর্তন ঘটে বা বস্তুটি ভেঙ্গে যায় ।
প্রশ্ন- গ্যাস ভর্তি বেলুন সহজে উপরের দিকে উঠে যায় কেন?
উত্তর: গ্যাসভর্তি বেলুন বলতে মূলত হাইড্রোজেন গ্যাস বা বিভিন্ন হালকা গ্যাস ভর্তি বেলুন বুঝায়। হাইড্রোজেন গ্যাসের ঘনত্ব বায়ুর ঘনত্বের চেয়ে বেশি কম। তাই এই গ্যাস ভর্তি হালকা বেলুন সহজে উপরে উঠে যায়।
প্রশ্ন- পানির ঘনত্ব 1000kgm-3 বলতে কী বোঝ?
উত্তর: কোনো বস্তুকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো স্থির তরল বা বায়বীয় পদার্থে নিমজ্জিত করলে তরল বা বায়বীয় পদার্থের চাপের জন্য বস্তু উপরের দিকে যে লব্ধির অনুভব করে তাকে প্লবতা বলে । ব্যাখ্যা: যে কোনো তরল বা বায়বীয় পদার্থে কোনো বস্তু ডুবালে এর ওজন কম মনে হয়। এর কারণ, তরল বা বায়বীয় পদার্থে অবস্থায় বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল উর্ধ্বচাপজনিত বল বস্তুর ওজনের বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে, ফলে বস্তুর ওজন কম মনে হয়। বস্তুর প্লবতার জন্যই এরকম হয়।
প্রশ্ন- একটি পানিপূর্ণ পাত্রে একটি ডিম ছেড়ে দিলে ডিমটি ডুবে?
উত্তর: পানির ঘনত্ব 1000 kgm’ বলতে বোঝায় পানির প্রতি এক যাবে কিন্তু পাত্রটিতে পরিমাণমত লবণ মিশ্রিত করে ডিমটি ছেড়ে দিলে ঘনমিটার আয়তনের ভর 1000 kg ।
প্রশ্ন- বরফ পানিতে ভাসে কেন?
উত্তর: কোনো বস্তুর ঘনত্ব পানি অপেক্ষা কম হলে বস্তুটি পানিতে ভাসবে, বেশি হলে ডুবে যাবে। বরফ পানির একটি অবস্থা। পানি যখন বরফে পরিণত হয় তখন এর আয়তন বৃদ্ধি পায় কিন্তু ভর একই থাকে। যার কারণে ঘনত্ব হ্রাস পায়। তাই বরফ পানিতে ভাসে ।
প্রশ্ন- মৃত সাগরের পানিতে মানুষ ডুবে না কেন?
উত্তর: কোনো বস্তু পানিতে ভাসবে না ডুববে তা নির্ভর করে বস্তুর ঘনত্ব ও পানির ঘনত্বের উপর। মৃত সাগরের পানিতে লবণ ও অন্যান্য অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকার জন্য এই সাগরের পানির ঘনত্ব এত বেশি যে মানুষ সেখানে ডুবে না ।
প্রশ্ন- বস্তুর ভর স্থির থাকলে আয়তনের সাথে ঘনত্বের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানে ঘনত্ব বলে।
V আয়তনের কোনো বস্তুর ভর m এবং ঘনত্ব p হলে, p = m যেহেতু m স্থির ραν V অর্থাৎ ভর স্থির রেখে আয়তন বাড়লে ঘনত্ব হ্রাস পায়।
প্রশ্ন- প্যাসকেলের সূত্রটি বিবৃত করো। ভেসে উঠবে কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: পরিষ্কার পানির ঘনত্ব (প্রায় 1000kgm-3) অপেক্ষা লবণাক্ত পানির ঘনত্ব (প্রায় 1024 kgm3) বেশি হওয়ায় লবণ মিশ্রিত পানির প্লবতা বেশি অর্থাৎ পরিষ্কার পানির তুলনায় লবণ মিশ্রিত পানিতে চাপের জন্য বস্তু উপরের দিকে বেশি লব্ধি বল অনুভব করবে। তাই লবণ মিশ্রিত পানিতে ডিম ছেড়ে দিলে ভেসে উঠবে ।
প্রশ্ন- একটি পানিপূর্ণ পাত্রের বিভিন্ন গভীরতায় ছিদ্র করলে বিভিন্ন বেগে পানি নির্গত হয় কেন— ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: সৃজনশীল রচনামূলক প্রশ্নের ২০-খ দেখো । প্রশ্ন-৩৩. একটি আয়তাকার লোহার বারের ভর 320g। এর মাত্রাগুলো উত্তর: এখানে, লোহার বারের ভর, m = 320 g হলো 2cm, 2cm ও 10 cm বারটি পানিতে ভাসবে না ডুববে? বারের আয়তন, V = 2 × 2 × 10 cm 3 = 40cm
বারের ঘনত্ব, p= V = 320g 40cm = 8g cm -3 আমরা জানি, বিশুদ্ধ পানির ঘনত্ব 1 gem । যেহেতু বারটির ঘনত্ব পানির ঘনত্বের চেয়ে বেশি তাই বারটি ডুবে যাবে।
প্রশ্ন- প্লবতা কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর: কোনো প্রবাহী পদার্থে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে নিমজ্জিত কোনো বস্তুর উপর তরল বা বায়বীয় পদার্থ লম্বভাবে যে ঊর্ধ্বমুখী বল ক্রিয়া করে তাকে প্লবতা বলে । নিমজ্জিত বস্তুর বিভিন্ন তলে প্রযুক্ত পার্শ্বচাপসমূহ পরস্পর বিপরীতমুখী ও সমান বলে নাকচ হয়ে যায় । কিন্তু তরলের মুক্ততল হতে কোনো বিন্দুতে চাপ যেহেতু ঐ বিন্দুর তরলের অভ্যন্তরে গভীরতার সমানুপাতিক তাই বস্তুটির নিচের তলে প্রযুক্ত চাপ উপরের তলে প্রযুক্ত চাপ অপেক্ষা বেশি।
আশাকরি পদার্থের অবস্থা ও চাপ পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে।
আরো পড়ুনঃ গতিবিদ্যা – এইচএসসি – পদার্থবিজ্ঞান ১মপত্র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর